Bratya Basu vs C V Ananda Bose

আমার কাছে মুখ্যমন্ত্রীই ‘নৈতিক আচার্য’, আইনি আচার্য রাজ্যপালকে সাফ চ্যালেঞ্জ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যের

আচার্য হিসাবে প্রায় দিনই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যাচ্ছেন রাজ্যপাল বোস। শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য জানান, তাঁর কাছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নৈতিক আচার্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৫২
Share:

গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে রাজ্যপাল তথা আচার্য বোসের বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন পর্ব। ফাইল চিত্র।

রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এল। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দিলেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তিনি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য বলে মানেন না। যদিও আইনত এই পদ রাজ্যপালেরই। সম্প্রতি আচার্য হিসাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন রাজ্যপাল বোস। শুক্রবার ব্রাত্য জানিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নৈতিক আচার্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। যে সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই ২০২২ সালে বিধানসভায় বিল পাশ করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজভবন থেকে সেই বিল পাশ না হওয়ায় এখনও চূড়ান্ত করা যায়নি।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে রাজভবনের অদূরে বি আর আম্বেডকরের মূর্তিতে মালা দিতে এসেছিলেন ব্রাত্য। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসাবে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাত্য। গত সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে রাজ্যপাল তথা আচার্য বোসের বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন পর্ব। প্রথমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে শুরু। তার পর বারাসত বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও গিয়েছিলেন বোস। দেখা করেছেন সেখানকার অধ্যাপক এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে। এই সব সফরে বিভিন্ন অনুদানের ঘোষণাও করেছেন রাজ্যপাল। আবার বারাসতে গিয়ে নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্যও ঠিক করে এসেছেন বোস। ব্রাত্য প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্যপালের এই সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েই। তিনি জানতে চেয়েছেন, ‘‘যে অনুদান উনি ঘোষণা করেছেন, সে তো সরকারি অর্থ। উনি কী ভাবে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও কথা না বলে একর পর এক এ ধরনের ঘোষণা করতে পারেন?’’

ব্রাত্যের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, তিনি ইতিমধ্যে রাজ্যপালের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর ফোনও ধরেননি রাজ্যপাল। শুক্রবার তাই প্রকাশ্যেই রাজ্যপালকে বার্তা দিয়েছেন ব্রাত্য। এক রকম সময় বেঁধে দিয়েই তিনি জানিয়েছেন, ২০২২ সালের যে বিল বিধানসভায় পাশ করিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে ঠিক করা হয়েছিল, সেই বিলের প্রসঙ্গ তুলে ব্রাত্য জানিয়েছেন, রাজ্যপাল সই না করলে দরকারে তিনি আবার বিধানসভায় ওই বিল পাশ করাতে পারেন।

Advertisement

২০২২ সালের জুন মাসে যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত চরমে, তখনই বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পর সেই বিলে অনুমোদন নেওয়ার জন্য রাজভবনেও পাঠানো হয়েছিল। ধনখড়ের আমলে সেই বিল প্রত্যাশিত ভাবেই অনুমোদন পায়নি। কিন্তু পরে রাজ্যের রাজ্যপাল বদল হওয়ার পরও রাজভবন থেকে বিলটি রাজ্য সরকারের কাছে এসে পৌঁছয়নি। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের একটি সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করে ব্রাত্য বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে কোনও বিল রাজভবনে দু’সপ্তাহের বেশি থাকতে পারে না। কিন্তু বাংলার রাজ্যপালের কাছে ওই বিল ১০ মাস ধরে পড়ে রয়েছে।’’ এ প্রসঙ্গেই রাজ্যপালের নাম না করে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘উনি হয় বিল সই করে দিন, নয়তো আমরা আবার বিধানসভায় পাশ করাব। দরকার হলে দু’বার পাশ করাব।’’ এমনকি, ২০০৭ সালে কেন্দ্রের তৈরি পুঞ্ছি কমিশনের রিপোর্ট উল্লেখ করে রাজ্যপালকে ‘শ্বেতহস্তী’ বলেও মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement