প্রতীকী ছবি।
বাড়ির অমতে বিয়ে করেছেন মেয়ে। অভিযোগ, তাই লোকলস্কর পাঠিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে তুলে আনতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা। মেয়েকে তুলে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। তবে শেষ রক্ষা হল না। ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যে পুলিশ গিয়ে নববধূকে উদ্ধার করল। অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই বধূর বাবা, দাদা-সহ এগারো জনকে।
সিনেমার মতো শোনালেও রবিবার দুপুরে এমন ঘটনারই সাক্ষী থেকেছে বাঁকুড়ার ওন্দার ধবনী। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় মেয়েটির বাবা নিরঞ্জন মণ্ডল, দাদা জয়ন্ত মণ্ডল-সহ মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা বাঁকুড়া সদর থানার জগদল্লা এলাকার বাসিন্দা। সোমবার তাঁদের বাঁকুড়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রিম্পা ওন্দা মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। গত ২৮ জুলাই ওন্দার ধবনীর বাসিন্দা রাজু লাইকে তিনি বিয়ে করেন। রিম্পার অভিযোগ, রবিবার দুপুরে শ্বশুরবাড়িতে তিনি খাওয়াদাওয়া করছিলেন। সে সময়ে একটি গাড়ি ও কয়েকটি মোটরবাইক নিয়ে তাঁর আত্মীয়েরা সেখানে উপস্থিত হয়। রিম্পার কথায়, ‘‘দুই দিদি, জেঠিমা, দাদা-সহ অন্য আত্মীয় ও কিছু লোকজন শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে পড়েন। দিদিরা ও জেঠিমা মিলে জোর করে আমাকে টেনে বাড়ি থেকে বার করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে।’’
ততক্ষণে ধবনী গ্রামের মানুষজনও রিম্পার শ্বশুরবাড়ির সামনে জড়ো হয়ে গিয়েছেন। স্থানীয় লোকজন রিম্পার আত্মীয়দের ঘিরে ফেলেন। সে সময়ে রিম্পার দুই আত্মীয় তাঁকে জোর করে একটি মোটরবাইকে তুলে চম্পট দেন বলে অভিযোগ। গ্রামবাসী যদিও ঘিরে রাখেন অন্য আত্মীয়দের। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক ব্যক্তিদের উদ্ধার করে।
ওন্দার ওসি রামনারায়ণ পাল পুনিশোল ফাঁড়ির পুলিশকে জগদল্লায় রিম্পার বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশকর্মীরা জগদল্লায় গিয়ে জানতে পারেন, রিম্পাকে বাঁকুড়া সদর থানার কালপাথর এলাকায় তাঁর পিসির বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। জগদল্লা থেকে সরাসরি কালপাথর রওনা দেয় পুলিশ। সেখানে পিসির বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রিম্পাকে।
রিম্পা এ দিন বলেন, “বাড়ির অমতে বিয়ে করেছি বলে বাড়ির লোকজন তা মানবে না, জানতাম। আমি প্রাপ্তবয়স্ক। এ ভাবে শ্বশুরবাড়ি থেকে আমাকে অপহরণের চেষ্টা হবে, কল্পনা করিনি! ওঁরা আমার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের মারধর করেছেন। ওঁদের শাস্তি চাই।’’
ধবনীর বাসিন্দা তথা ওন্দা ব্লক তৃণমূল নেতা প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামবাসী ও পুলিশের যৌথ চেষ্টায় রিম্পার পরিবারের মতলব সফল হয়নি।” এ দিন আদালতে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রিম্পার বাপের বাড়ির লোকজন।