—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হৃদ্রোগে আক্রান্তদের ন্যূনতম চিকিৎসা না করে বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করে দেওয়া হয় বলে জেলার নানা হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়। এ বার সেই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া মেডিক্যাল-সহ রাজ্যের আটটি হাসপাতালে গড়া হচ্ছে ‘টেলি-কার্ডিওলজি হাব’। প্রতিটির সঙ্গে জেলার কয়েকটি হাসপাতালকে যুক্ত করা হবে। হৃদ্রোগে আক্রান্ত কেউ সেই হাসপাতালগুলিতে গেলে সরাসরি বাঁকুড়া মেডিক্যাল থেকে ‘টেলি-থেরাপি’র মাধ্যমে রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা হবে। আজ, সোমবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে এই পরিষেবা শুরু হওয়ার কথা বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, বাঁকুড়া মেডিক্যাল ছাড়াও এই পরিষেবা চালু হচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল, এনআরএস মেডিক্যাল, আরজি কর মেডিক্যাল, এসএসকেএম, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই বাঁকুড়া মেডিক্যালে ‘টেলি-থেরাপি’ চলছে। সে কারণে ‘টেলি-কার্ডিওলজি হাব’-এর জন্য আলাদা ভাবে কোনও পরিকাঠামো গড়তে হচ্ছে না। তবে বাঁকুড়া মেডিক্যালের হৃদ্রোগে বিভাগের চিকিৎসক-সহ ‘টেলি-থেরাপির’ সঙ্গে যুক্ত হাসপাতালগুলির কয়েক জন চিকিৎসককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘হাব’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য আপলোড করতে হবে, ‘হাব’-এর চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী কী ভাবে কাজ করতে হবে, সে সব হাতেকলমে শেখানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল, খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল, ওন্দা, বড়জোড়া, ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ওই হাসপাতালগুলিতে বিশেষ পরিকাঠামো তৈরি করে ও হৃদ্রোগের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। সুপারের বক্তব্য, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে হৃদ্রোগে আক্রান্তদের ঠিক সময়ে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হলে অন্তত জীবনহানির আশঙ্কা কমে। ফলে নতুন এই পরিষেবা চালু হলে রোগীর অবস্থা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালেই কিছুটা স্থিতিশীল করা যাবে। তার পরে তাঁকে অন্যত্র রেফার করলে ঝুঁকি অনেকটাই কমবে।’’ তাঁর সংযোজন, “প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা টেলি-কার্ডিওলজি থেরাপি চালু থাকবে।”
বাঁকুড়া-সহ আশপাশের কয়েকটি জেলার হৃদ্রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসতে হয় বাঁকুড়া মেডিক্যালে। মাসে কম করে আসেন ৯০ জন হৃদ্রোগী। টেলি-মেডিসিন পরিষেবা চালুর মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো বাঁকুড়া মেডিক্যালের হৃদ্রোগ বিভাগে রয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হৃদ্রোগ বিভাগে এক জন সিনিয়র চিকিৎসক-সহ দু’জন আরএমও, তিন জন এমও, সাত জন হাউস স্টাফ এবং ছ’জন ক্যাথল্যাব টেকনিসিয়ান রয়েছেন। ফলে পরিকাঠামো নিয়ে
চিন্তার কারণ নেই। বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুন্ডু বলেন, “টেলি-কার্ডিওলজি হাব রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে।”