বিক্ষোভরত বিশ্বভারতীর ছাত্র সংগঠন। —নিজস্ব চিত্র।
তিন পড়ুয়াকে বরখাস্তের মেয়াদ বাড়ানোর পর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবিতে সরব হলেন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা। বুধবার বিশ্বভারতীয় গেটের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রায় দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও বিশ্বভারতীর স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বকেয়া রয়েছে। এই আবহে পড়ুয়াদের সাসপেনশনের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানোয় উপাচার্যের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিশ্বভারতীর ছাত্র সংগঠন।
ভাঙচুরের অভিযোগে মাস ছয়েক আগে বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের তিন প়ড়ুয়াকে সাসপেন্ড করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর স্বৈরাচারী আচরণের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় অর্থনীতির অধ্যাপককে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। যদিও ভাঙচুরের অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন পড়ুয়ারা। সম্প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নোটিস জারি করে ওই প়ড়ুয়াদের বরখাস্তের মেয়াদ আরও ৩ মাস বাড়িয়েছেন। ফলে তাঁদের সাসপেন্ড থাকার মেয়াদ বেড়ে ন’মাস হয়ে গিয়েছে। যদিও আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের পাল্টা দাবি, ‘‘ভাঙচুর খতিয়ে দেখতে প্রথম তিন মাসে তদন্ত কমিটির দু’বার বৈঠক হলেও তা পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। আমরা বরাবরই স্বচ্ছ তদন্তের দাবি করে আসছি।’’
পড়ুয়াদের বরখাস্ত করা ছাড়াও বিশ্বভারতীর স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৩০০ জন কর্মীর জুন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতেও সরব হয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ফাল্গুনী পান বলেন, ‘‘উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নোংরা করেছেন। সন্তানসুলভ পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করেছেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। প্রায় এক বছরের কাছাকাছি সাসপেনশনে ওই তিন পড়ুয়ার পুরো সেমিস্টার ভেস্তে গেল।’’
তাঁর আরও দাবি, ‘‘বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর থেকেই প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করছেন। শিক্ষকেরা বেতন পান না। পেনশনভোগীদের জোটে না পেনশন। পড়ুয়াদের মিথ্যে অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়। উপাচার্য ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করেছেন। বিশ্বভারতীর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে ভূমিকা থাকা প্রয়োজন, তার ন্যূনতম এখানে নেই। তা ফেরাতে এবং পড়ুয়াদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি।’’