অসন্তোষ: রাস্তায় বাসন, খাবার রেখে বিক্ষোভ ছাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র
নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতীর ছাত্রীনিবাসে। ওই অভিযোগে শুক্রবার সকালে ছাত্রীনিবাসের সামনে খাবার-সহ বাসনপত্র রাস্তায় নামিয়ে বিক্ষোভ দেখান হস্টেলের ছাত্রীরা। এ ছাড়াও ছাত্রীনিবাসের ক্যান্টিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিচেন ভেন্ডারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রীরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি কিচেন ভেন্ডার। তাঁর দাবি, খাবারের বকেয়া চাওয়ায় ছাত্রীরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
ছাত্রীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বভারতীর আনন্দ সদন ও প্রতিমা ছাত্রীনিবাসের ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ও রাতেও ওই ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। এর পরেই শুক্রবার সকাল থেকে আনন্দ সদন ও প্রতিমা ছাত্রীনিবাসের আবাসিকেরা প্রতিবাদে সরব হন। তাঁরা ছাত্রীনিবাসের রান্নাঘরে রাখা কাঁচা মাছ, ভাজা মাছ, বাসি চাটনি, কাটা আনাজ, বাটা মশলা-সহ সমস্ত খাবার বাইরে বের করে দিয়ে রান্নাঘরে তালা বন্ধ করে দেন। রাস্তায় হাঁড়ি, কড়াই-সহ অন্য বাসনকোসন এবং খাবার রেখে প্রতিবাদ জানান। ছাত্রীদের মুখে মুখে ছিল রবীন্দ্র সঙ্গীত। সঙ্গীত ভবনের দুই ছাত্রী বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছিল। এ ছাড়াও বেশ কিছু খাবার ফ্রিজে রেখে সেগুলি গরম করে খাওয়ার সময় দেওয়া হচ্ছিল। এই নিয়ে বারবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই আমরা আজ এ ভাবে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়েছি।’’
এর আগেও বিশ্বভারতীর বিভিন্ন হস্টেলে খাবার নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। পড়ুয়াদের পথে নামতেও দেখা গিয়েছে। গত বছর মার্চেও নিম্নমানের খাবারের অভিযোগ তুলে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ছাত্রীরা। যাঁর বিরুদ্ধে এ দিন ছাত্রীদের মূল অভিযোগ, ছাত্রী নিবাসের ক্যান্টিনের সেই কিচেন ভেন্ডার জয় বড়ুয়ার অবশ্য দাবি, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের অনেক টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে ক্যান্টিনে। সেই টাকা ওদের কাছ থেকে চাইতেই তারা আজ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’
এ দিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে ছাত্রনিবাসের সামনে পৌঁছন বিশ্বভারতীর ছাত্র পরিচালক শঙ্কর মজুমদার। আসেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। তাঁদের সামনে পেয়ে ছাত্রীরা আবার ক্ষোভ উগরে দেন। বিক্ষোভও দেখাতে থাকেন। এর পরে আনন্দ সদন এবং প্রতিমা ছাত্রীনিবাসের আবাসিকদের নিয়ে একটি আলোচনায় বসেন ছাত্র পরিচালক-সহ আধিকারিকেরা। তাতে ছাত্রীদের সমস্ত অভাব-অভিযোগের কথা শোনা হয়। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, আলোচনায় ঠিক হয়েছে, ক্যান্টিনে তাঁদের যা বকেয়া রয়েছে, তা পুজোর আগে ছাত্রীদের মিটিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি ছাত্রীদের পছন্দমতো নতুন ভেন্ডার নিয়োগ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে খতিয়ে দেখছি। যদি এমন ত্রুটি থেকে থাকে, তা হলে তা দ্রুত দূর করার চেষ্টা করা হবে।’’