অনিশ্চিত শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা!
এ বছরও অনিশ্চিত শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। গত বছরের মতো এ বারও পৌষমেলার আয়োজন করতে আগ্রহী নয় শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। বরং রাজ্য সরকারই পৌষমেলা আয়োজন করুক, এই মর্মে বোলপুর পুরসভাকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, এ বারও বিশ্বভারতী পৌষমেলা না করলে তারাই মেলার আয়োজন করবে। বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প পৌষমেলার আয়োজন করা হবে।
বহু বছর ধরে বিশ্বভারতীর পরিচালনায় শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের উদ্যোগে বীরভূমের বোলপুরের পূর্বপল্লির মাঠে পৌষমেলা আয়োজিত হয়। ৭ থেকে ১০ পৌষ— এই চার দিন মেলা হয়। গত বছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেলা করতে রাজি না হওয়ায় ডাকবাংলো মাঠে মেলার আয়োজন করে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি। এ বছরও ট্রাস্টের বক্তব্য, মেলার জন্য যে উপযুক্ত পরিকাঠামো দরকার, তা নেই ট্রাস্টের কাছে। পর্যাপ্ত জলের অভাব রয়েছে। যার জেরে শৌচাগারের ব্যবস্থা করাও সম্ভব হচ্ছে না।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে, পূর্বপল্লির মাঠ লাগোয়া চারটি ব়়ড বাঁধ রয়েছে। মেলায় বসা দোকানিরা সেখানকারই জল ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সংস্কারের অভাবে ওই বাঁধগুলি এখন মজে গিয়েছে। যার ফলে এত কম সময়ের মধ্যে বিকল্প জলের জোগান দেওয়াও সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে পৌষমেলা করার জন্য রাজ্য সরকারই দ্বারস্থ হয়েছে ট্রাস্ট। সরকারের পক্ষ থেকেই যাতে এই ঐতিহ্যবাহী মেলার আয়োজন করা হয়, তার জন্য বোলপুর পুরসভাকে চিঠি দিয়েছেন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার।
গত বছরই পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শান্তিনিকেতনে। শেষমেশ ডাকবাংলো মাঠে পৌষমেলা করার অনুমতি পায় বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ। সম্পূর্ণ পৌষমেলার আদলেই মেলায় নাগরদোলা থেকে শুরু করে মাটির সামগ্রী, বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী, ছোট-বড় খাবারের দোকান মিলিয়ে হাজার খানেক স্টল বসে মেলায়। মেলায় পর্যাপ্ত জল এবং আলোর ব্যবস্থাও করা হয়। এ বারও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চও মেলা করতে আগ্রহী। মঞ্চের সভাপতি সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘শান্তিনিকেতন পৌষমেলা এত বছর ধরে হয়ে আসছে। এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান যদি বিশ্বভারতী না করে, তা হলে আমরা করব। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের চিঠি আমরা পেয়েছি।’’
মেলার আয়োজনে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়েছে বোলপুর পুরসভার পক্ষ থেকে। পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা গত বছর পৌষমেলার করার ক্ষেত্রে সব রকম ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলা সংস্কৃত মঞ্চকে। এ বারও সহযোগিতা করব।’’