অমর্ত্যের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’তে সাঁটিয়ে আসা নোটিসে বলা হয়েছে আগামী ১৯ এপ্রিল, জমি মামলার নিষ্পত্তির পদক্ষেপ করা হবে। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীর শুনানিতে উপস্থিত না থাকার ফলে অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করতে চলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৯ তারিখ বেলা ১২টা নাগাদ ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী ওই ‘পদক্ষেপ’ করা হবে— এই মর্মে অমর্ত্যের আইনজীবীকে আগে ইমেলে নোটিস পাঠিয়েছেন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার। এ বার অর্থনীতিবিদের বাড়ি ‘প্রতীচী’র গেটের সামনে নোটিস সাঁটিয়ে দিয়ে গেলেন তাঁরা।
অমর্ত্য শান্তিনিকেতনে ১৩ ডেসিম্যাল ‘জমি দখল’ করে আছেন। এই অবস্থানে অনড় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর শুনানিতে উপস্থিত না থাকার কারণ দেখিয়ে আগামী ১৯ এপ্রিল বেলা ১২টায় ১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ (উচ্ছেদ) করতে চলেছে বিশ্বভারতী। এই সমন নোটিস জারি করার পর বিশ্বভারতীর একাংশ কর্তৃপক্ষের নিন্দায় সরব হয়েছেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ সংক্রান্ত নোটিস পাঠানো হয়েছে অমর্ত্যের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তীকেও। এ ছাড়াও ওই নোটিসের প্রতিলিপি গিয়েছে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার, বোলপুরের মহকুমা শাসক, বোলপুর এবং শান্তিনিকেতন থানায়। নোটিসে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন,১৯৭১ সালের দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী ১৯ এপ্রিল উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, ২৯ এপ্রিল বিকেলে অমর্ত্য অথবা তাঁর কোনও প্রতিনিধিকে বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব তথা এস্টেট অফিসারের কাছে শুনানির জন্য হাজির হতে হবে।
এখন অমর্ত্যের আইনজীবী জানাচ্ছেন, অর্থনীতিবিদ বিদেশে থাকায় এবং জমি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি এখনই তাঁদের কাছে না-থাকায় সংশ্লিষ্ট দিনের শুনানিতে উপস্থিত থাকা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই মর্মে বিশ্বভারতীকে একটি চিঠি পাঠিয়ে ৪ মাস সময় চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, বিশ্বভারতী ৪ মাসের বদলে মাত্র ১০ দিন সময় দেয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, আইন অনুযায়ী ৭ দিনের বেশি সময় দেওয়া যায় না। যতটা সম্ভব সময় দেওয়া হয়েছে। তাই আগামী ১৯ এপ্রিলই ‘কড়া সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হবে বলে ঠিক করে নিয়েছেন। নোটিসে বলা হয়েছে আগামী ১৯ এপ্রিল, জমি মামলার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পদক্ষেপ করা হবে।
অমর্ত্য এখন বিদেশে। এই অবস্থায় জমি দখল যাতে না হয়, এই মর্মে দায়ের করা একটি মামলায় বাড়ির দেখভালের দায়িত্বে থাকা গীতিকণ্ঠ মজুমদার বোলপুর মহকুমা এগজ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ সিআরপিসি অনুযায়ী আবেদন করেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বোলপুর এগজ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্দেশও দেয়। অমর্ত্যের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র আশপাশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দায়িত্ব দেওয়া হয় শান্তিনিকেতন থানার কর্তব্যরত ওসিকে।