বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
তৃণমূলের অবস্থান মঞ্চ থেকে উপাচার্যকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই মর্মে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ইমেল করে বিদ্যুৎ থানায় এই নালিশ জানিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বিদ্যুতের নালিশ করাকে তীব্র কটাক্ষে ভরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, উপাচার্য অভিযোগ জানিয়েছেন, অবস্থান মঞ্চ থেকে কেউ তাঁকে বোলপুর, বীরভূম থেকে বার করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কেউ আবার তাঁকে শ্মশানে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছেন। বিদ্যুতের দাবি, প্রাণের ভয় নিয়ে তাঁর দিন কাটছে। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন উপাচার্য। যদিও একে স্রেফ শিরোনামে আসার খেলা বলে অভিহিত করছেন তৃণমূল নেতারা।
অবস্থানমঞ্চ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া তৃণমূলের ছাত্র নেতা জামশেদ আলি খান এবং বিশ্বভারতীর কর্মী সংগঠনের নেতা গগন সরকার তীব্র কটাক্ষ করেছেন উপাচার্যকে। জামশেদ বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসের অনেকটা বাইরে চলছে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি। বাউল গান, রবীন্দ্র সংগীত এবং বক্তৃতা হচ্ছে। উপাচার্যের পাঁচ বছরের নানা কীর্তিকলাপও তুলে ধরছেন বক্তারা। তাতেই বিপদ দেখতে পাচ্ছেন উপাচার্য। তাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে নতুন নাটক করতে চাইছেন।’’ গগন বলেন, ‘‘আশ্চর্যের ব্যাপার হল, আমাদের আন্দোলন নিয়ে তিনি চিন্তিত। কিন্তু কলঙ্কিত ফলক বদল কবে হবে, তার কোনও জবাব উপাচার্য দিতে পারছেন না। আসলে, শিরোনামে আসতেই তিনি এ সব অভিযোগ করছেন, সেটা সবার কাছেই পরিষ্কার।’’
স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান প্রতিবাদ করছি। উনি নিজের ভুল ঢাকতে এখন অনেক কিছুই করবেন, বলবেন। ফলক বদলে দিলেই তো আর কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়। সেটা করছেন না কেন? এ ভাবে সহানুভূতি আদায় করা যাবে না।’’
ইউনেসকোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কতগুলি পাথরের ফলক বসানো হয়। সেই ফলকে লেখা বয়ান নিয়ে বিতর্কের শুরু। তাতে আচার্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও ছিল না স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামই। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে দলকে রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে ঝুলিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মেনে বিশ্বভারতীর কবিগুরু মার্কেটের কাছে অবস্থানমঞ্চ গড়ে গত পাঁচ দিন ধরে চলছে কর্মসূচি। এ বার সেই মঞ্চ থেকেই তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে ইমেলের মাধ্যমে থানায় নালিশ জানালেন উপাচার্য বিদ্যুৎ।