Mahua Moitra

সংবাদমাধ্যমগুলির থেকে মানহানি মামলায় ক্ষতিপূরণ চান না মহুয়া! ‘ইউটার্ন?’ খোঁচা নিশিকান্তের

‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ বিতর্ক শুরুর পর বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর দাবি ছিল, কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ করে তাঁকে আগে থেকেই দোষী ঠাওরানো হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৩৪
Share:

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।

‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ বিতর্কে সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলায় কোনও দাবিদাওয়া নেই মহুয়া মৈত্রের। মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টকে তেমনটাই জানিয়েছেন, তৃণমূল সাংসদের আইনজীবী সমুদ্র ষড়ঙ্গী। ষড়ঙ্গী দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সচিন দত্তকে জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমগুলির উপর করা মানহানির মামলায় কোনও ক্ষতিপূরণ চান না মহুয়া। তবে জারি থাকবে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ও আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলা।

Advertisement

যদিও পুরো বিষয়টিকে মহুয়ার ‘ইউটার্ন’ বলে খোঁচা দিয়েছেন নিশিকান্ত। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে বিজেপি সাংসদ লেখেন, ‘‘মহুয়াজি দিল্লি হাই কোর্টে আজ নিজের দোষ স্বীকার করে সংবাদমাধ্যমের উপরে করা মামলা ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এখন শুধু আমার আর আইনজীবী দেহাদ্রাইয়ের উপর করা মামলা চালিয়ে যেতে চান উনি। একে ইউটার্ন বলব না ভয়?’’

‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ বিতর্ক শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর দাবি ছিল, কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ করে তাঁকে আগে থেকেই দোষী ঠাওরানো হচ্ছে। যে কারণে সম্মানহানি হচ্ছে তাঁর। নিশিকান্ত এবং জয়ের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধেও মানহানির মামলা করেন মহুয়া। সেই মামলাতেই সংবাদমাধ্যমগুলির থেকে তাঁর কোনও দাবিদাওয়া নেই বলে মঙ্গলবার আদালতে জানালেন তৃণমূল সাংসদের আইনজীবী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’-এর আইনজীবী সিদ্ধান্ত কুমার জানিয়েছেন, যে হেতু মহুয়া সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে মানহানির জন্য কোনও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছেন না, তাই মামলাটি সংশোধন করা উচিত। এর পরই আদালতের তরফে মহুয়ার আইনজীবীকে মামলার মেমো সংশোধন করতে বলা হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৫ ডিসেম্বর।

অন্য দিকে, নিশিকান্তের আইনজীবী অভিমন্যু ভান্ডারি আদালতে জানান, মহুয়া একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর সংসদীয় লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তাই এই মানহানির মামলার কোনও ভিত্তি নেই বলেও আদালতে দাবি করেছেন অভিমন্যু। তাঁর দাবি, এই মামলা করে ‘মিথ্যাচার’ করছেন মহুয়া।

মহুয়ার বিরুদ্ধে টাকা এবং উপহারের বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন তোলার অভিযোগ আনেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। তাঁর অভিযোগ ছিল, শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে সংসদে প্রশ্ন করার জন্য শিল্পপতি হীরানন্দানির কাছ থেকে নগদ টাকা এবং দামি উপহার নিয়েছেন মহুয়া। এ নিয়ে তদন্তের দাবি তুলে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন নিশিকান্ত। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সংসদের ওয়েবসাইটে লগ ইন করার জন্য নিজের লগ ইন কোড এবং পাসওয়ার্ড হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছেন মহুয়া। ওই ব্যবসায়ী দুবাইয়ে বসে তার ‘সুযোগ’ নিয়েছেন। একই অভিযোগ জানিয়ে সিবিআই প্রধানকে চিঠি লিখেছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। মহুয়া পাল্টা দাবি করেন, সমস্ত সাংসদের লগ ইন কোড এবং পাসওয়ার্ড কবে কোথা থেকে ব্যবহার হয়েছে, তা প্রকাশ করা হোক। তা হলেই বোঝা যাবে, আরও কেউ ওই একই কাজ করেন কি না।

‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ করার এবং সংসদের ওয়েবসাইটে লগ ইন করার জন্য নিজের লগ ইন কোড এবং পাসওয়ার্ড ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেওয়ার যে অভিযোগ নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাই তুলেছিলেন, তার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন মহুয়া। মোট ১৫টি সংবাদমাধ্যমকেও সেই মামলায় পক্ষ করা হয়েছিল। তাঁকে নিয়ে অপমানজনক পোস্ট শেয়ার করতে দেওয়ার জন্য এক্স (সাবেক টুইটার), গুগ্‌ল এবং ইউটিউবকেও দুষেছিলেন মহুয়া। তবে মঙ্গলবার সেই সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে কার্যত স্বস্তি দিলেন বাংলার সাংসদ।

প্রসঙ্গত, ‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ বিতর্কে লোকসভার এথিক্স কমিটি ইতিমধ্যে নিশিকান্ত ও জয়কে ডেকে একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মহুয়াকে মঙ্গলবার হাজিরা দেওয়ার জন্য প্রথমে চিঠি দিয়েছিল এথিক্স কমিটি। কিন্তু সাংসদ চিঠি লিখে জানান, ৪ নভেম্বর তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। ৫ নভেম্বরের পর তিনি যে কোনও দিন যেতে পারেন। ফের এথিক্স কমিটি মহুয়াকে চিঠি দিয়ে ২ নভেম্বর হাজিরা দেওয়ার কথা বলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement