সিউড়িতে প্লাস্টিক ব্যবহার। নিজস্ব চিত্র
জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকেই ৫০ মাইক্রনের চেয়ে পাতলা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার বিক্রি নিষিদ্ধ। বিধি না মানলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই জরিমানা করা হবে বলে ঘোষণা করেছিল পুরসভা।
তবে, সেই নির্দেশ যে বিশেষ মান্যতা পেয়েছে, বুধবার জেলা সদর সিউড়ি ও দুবরাজপুর শহরের বিভিন্ন বাজারে ঘুরে তেমনটা মনে হয়নি। কাঁচা আনাজ, মাছ, মাংসের দোকান হোক কিবা মুদি ও মিস্টির দোকান— সর্বত্রই এমন ‘নিষিদ্ধ’ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার লক্ষ্য করা গিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করার কোনও অভিযান হয়েছে বলে খবর নেই। যদিও সতর্কতা হিসাবে কিছু ব্যবসায়ী নিজেরাই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ এড়িয়ে চলায়, সেগুলির ব্যবহার তুলনায় কিছুটা কম ছিল।
তবে, ৫০ মাইক্রনের থেকে মোটা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের জন্যও জন্য যে শর্ত আরোপ করেছে পুরসভা, সেটা নিয়ে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, পুরসভা বলেছে ৫০ মাইক্রনের থেকে পুরু প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে হলেও মাসে চার হাজার অর্থাৎ বছরে ৪৮ হাজার টাকা জমা দিতে হবে পুরসভাকে। যেটা বাস্তবে অসম্ভব। তা ছাড়া, পুরসভার পক্ষ থেকে যে ধরনের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে, তার দামও অনেকটা বেশি। সিউড়ি মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেনের সম্পাদক কিষাণ পাল বলছেন, ‘‘বছরে ৪৮ হাজার দিয়ে কোনও ব্যবসায়ীই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে চাইবেন না। সম্ভবও নয়।’’
কয়েক জন ব্যবসায়ী তো সরাসরি বলে দিচ্ছেন, ‘‘হয় লুকিয়ে চুরিয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলবে। নইলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ক্রেতা সঙ্গে থলে না রাখলে বিক্রেতাদের সঙ্গে ঝগড়া ঝামেলা হতে বাধ্য।’’
সিউড়ি ও দুবরাজপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কঠিন-তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন ২০১৬ এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন ২০১৬ কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছে গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। কঠোর ভাবে সেই নির্দেশ কার্যকর করার জন্যই নোটিস জারি ও মাইকিং হয়েছে। পিছিয়ে আসার প্রশ্ন নেই। ৫০ মাইক্রনের বেশি পুরু যে ক্যারিব্যাগের নমুনা ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়েছে, সেটি আদতে প্লাস্টিক নয়। মাটিতে মিশে যেতে পারে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক নয়।
কিষাণবাবুর বক্তব্য, ‘‘পুরসভার তরফে এক-আধ দিন অভিযানের পর সব থেমে গেলে হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা দু’তরফকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কেননা, ক্যারিব্যাগ ব্যবহার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তা ছাড়া, ছোট ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা কোন পথে হাঁটবেন, সে ব্যাপারেও আলোকপাত করা উচিত প্রশাসনের।’’