জমি বির্তকে জেরবার অমর্ত্য সেন। — ফাইল চিত্র।
জমি-বিতর্কে অমর্ত্য সেনকে লাগাতার আক্রমণের নিশানা বানাচ্ছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এই বিষয়ে উপাচার্যের সমালোচনা করলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি জানান, অমর্ত্য সেনকে উপাচার্যের অপদস্থ করার বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজ্যসভায় সরব হবেন। রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরবেন।
বুধবার রাতে শান্তিনিকেতনের রতনপল্লিতে চা চক্রে ছিলেন রাজ্যসভার সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ। শান্তিনিকেতনের কিছু বাসিন্দা তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানান। সামিরুল বলেন, “বাংলার গর্ব অমর্ত্য সেনকে যে ভাবে উপাচার্য আক্রমণ করছেন, তার বিরুদ্ধে আমি রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার আগে থেকেই বলেছি। রাজ্যসভায় গিয়েও এ নিয়ে সরব হব। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান যেহেতু উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, তাঁকে বিষয়টি জানাব।’’ উপাচার্যের ভূূমিকার সমালোচনা করে সামিরুলের দাবি, “রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতনকে উনি ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তাই ওঁর সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভাল। রাজ্যসভায় উপাচার্যের পদত্যাগও দাবি করব।”
তবে যেহেতু এখনও সামিরুল রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে শপথ নেননি, তাই অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ সহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ তিনি চলতি অধিবেশনে রাজ্যসভায় তোলার সুযোগ পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সামিরুলের কথায়, “আগে আমি শপথ নিই। তার পরে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরব।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “জমির বিষয়টি বিশ্বভারতী এবং অমর্ত্য সেনের বিষয়। এর সঙ্গে রাজনীতি না নিয়ে আসাই ভাল।” সামিরুলের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
‘বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ’-এর রাজ্য সভাপতি সামিরুল কোভিড পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলেন। সম্প্রতি বীরভূমের বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিকের দুর্ঘটনায় মত্যু হয়েছে ভিন্ রাজ্যে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার আগে থেকে এই সমস্যা চলছে। প্রচুর মানুষ যেমন পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাইরে রাজ্যে যান, তেমনই বাইরের রাজ্য থেকেও বহু মানুষ পশ্চিমবঙ্গে কাজ করতে আসেন। এক মাস আগে উত্তরপ্রদেশের দু’জন শ্রমিক সদাইপুরে মারা গিয়েছেন। তাই পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার শুধু পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা নয়।’’ তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের প্রথম পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘কল্যাণ পর্ষদ’ তৈরি করেছেন।
পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুলই। তাঁকে বৃহস্পতিবার সকালে সংবর্ধনা জানায় ‘বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ’-এর বীরভূম জেলা কমিটি। মঞ্চের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সামিরুল বলেন, ‘‘এই মঞ্চ আমার কাছে বিশেষ আবেগের জায়গা। সেই আবেগের জায়গা থেকে আমি কোনওদিন নিজেকে বদলাতে পারব না।’’