‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে কেন্দ্র করে এ বার উত্তেজনা ছড়াল মল্লারপুরে। বুধবার রাতে মল্লারপুর থানার পারুলিয়া গ্রামে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি বাধে। পরে তা বড় আখার নেয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১১ জন জখম হন। আহতদের মল্লারপুরে, ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। গ্রামে উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনও পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পারুলিয়া গ্রামটি ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের ঝিকড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ছে। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ঝিকড্ডা পঞ্চায়েতে এলাকায় বুথের ভিতরে ব্যালট পেপার ছিনতাই, ভোট বাক্স লুট থেকে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছিল। ঝিকড্ডার দু’টি বুথে পুনর্নির্বাচনও হয়। বিজেপি র অভিযোগ পারুলিয়া গ্রামেও বোমাবাজি করে তৃণমূল বুথ দখল করেছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে আছে তৃণমূলের চেয়ে। পারুলিয়া গ্রামের দু’টি সংসদেই তৃণমূল বিজেপি-র থেকে পিছিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে ১ জুন পারুলিয়ায় বিজেপি কর্মীরা বিজয় মিছিল করেন। এলাকার বিজেপি নেতা নীলমাধব চৌধুরীর অভিযোগ, মিছিল চলাকালীন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মানিক লেট এবং তার ছেলে অভিজিৎ দিন তিনেক আগে বিজেপি কর্মী বুদ্ধদেব লেটকে একা পেয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন। বুধবার সন্ধ্যায় ফের তৃণমূল বিজেপি কর্মীদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি-র দাবি, বুদ্ধদেব-সহ তাদের ৬ জন কর্মী জখম হন। রাতেই তাঁদের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। বুদ্ধদেবের আঘাত গুরুতর হওয়ার জন্য তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
বিজেপি-র অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মানিক লেটের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে এখানে এগিয়ে থেকে বিজেপি কর্মীরা বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তাদের ফল ধরে রাখবার চেষ্টা করছেন। তার জন্য এলাকায় যখন তখন উত্তেজনার সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় আমার স্ত্রী, মেয়ে, জামাই, নাতনি গ্রামের একজন হাতুড়ে চিকিৎসককে দেখিয়ে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় বিজেপি কর্মীরা ওদের উদ্দেশে গালিগালাজ করে। মারধরও করে। খবর পেয়ে আমি এলাকায় পৌঁছলে গণ্ডগোল বেধে যায়।’’ তাঁর স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে দাবি করে মানিক বলেন, ‘‘আমাদের আরও ৪ কর্মী জখম হয়েছে।’’