তপন কান্দুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন শুভেন্দু অধিকারী —নিজস্ব চিত্র।
ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। কাউন্সিলরকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ঝালদা শহরে মিছিল করে তপনের বাড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কড়া ভাষায় রাজ্য পুলিশেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। সেখান থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তপনের বন্ধু নিহত নিরঞ্জন বৈষ্ণবের বাড়িতেও শুভেন্দু গিয়েছেন। নিরঞ্জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও করেছেন তিনি।
রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ ঝালদা শহরে এসে পৌঁছন বিরোধী দলনেতা। এর পর স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে নামোপারা থেকে তপনের বাড়ি পর্যন্ত মিছিল করেন শুভেন্দু। মিছিলে স্লোগান তোলা হয়, ‘তপন কান্দু অমর রহে’, ‘তপন কান্দু খুন হল কেন, পুলিশমন্ত্রী জবাব দাও’। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতাই এ রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী।
মিছিল নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় তপনের বাড়ি গিয়ে কাউন্সিলরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন শুভেন্দু। দেখা করেন তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর সঙ্গে। তাঁর থেকে পরিবারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, দাদা হিসাবে তিনি তপনের পরিবারের পাশেই থাকবেন। এর পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তপন ছিলেন অজাতশত্রু। ত্রিশঙ্কু ঝালদা পুরসভা দখল করতে তৃণমূল ওঁকে খুন করিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদগ্র খিদে, ঝুলে থাকা ঝালদা পুরসভাও ওঁর চাই।’’ সিবিআই তদন্ত নিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘হাই কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্ত চলছে। এ নিয়ে আমি বিশেষ কিছু বলব না। শুধু বলতে চাই, প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়ুক। শুধু সুপারি কিলার গ্রেফতার হল, এটা হলে চলবে না। বরং, তাঁকে ধরতে হবে যে ওই নির্দেশ দিয়েছেন। কান টানলে মাথা আসবে। সেই মাথাকে সামনে আনা হোক। না-হলে তপন কান্দুর পরিবার বিচার পাবেন না। আইসিকে জেরা করা হোক। উপর থেকে ওঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখা হোক।’’
ওই সময় শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন পূর্ণিমা। তিনি বলেন, ‘‘উনি (শুভেন্দু) কষ্ট করে আমাদের পাশে দাঁড়াতে এসেছেন। এতে আমরা কৃতজ্ঞ। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের তো এখনও আসার সময় হল না। তৃণমূলের কেউ এখনও আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেনি।’
এর পর তপনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাউন্সিলরের বন্ধু নিরঞ্জনের বাড়িতে যান শুভেন্দু। নিরঞ্জনের ছবিতেও মালা পরিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে দু’লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্যও করেন তিনি। প্রসঙ্গত, নিরঞ্জনের অপমৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতিই অস্বাভাবিক ভাবেই মৃত্যু হয়েছে তপন খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জনের। তাঁর মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটেও পুলিশ বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে।