বাবুলের রাজনীতি ছাড়া নিয়ে শুভেন্দুকেই কাঠগড়ায় তুললেন অনুব্রত। —ফাইল চিত্র।
বিজেপি-তে বাবুল-প্রস্থানের সঙ্গেও এ বার নাম জুড়ে গেল শুভেন্দু অধিকারীর। গেরুয়া শিবিরের অন্য কেউ নন, বরং বাবুল সুপ্রিয়র রাজনীতি ছাড়ার জন্য শুভেন্দুকেই কাঠগড়ায় তুললেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শুভেন্দুর জন্যই একে একে দল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন বিজেপি নেতারা।’’
শনিবার ফেসবুকে রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন বাবুল। তা নিয়ে মতামত জানতে চাইলে, আসানসোলের সাংসদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন অনুব্রত। মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়াতেই বাবুল রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র মন্ত্রী ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। কর্মী হিসেবে খারাপ ছিলেন না। মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই দুঃখ পেয়েছেন।’’
এর আগে অনুব্রতকে মেরুদণ্ডহীন বলে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছিলেন বাবুল। বাবুলকে পাঁচন মেখে খাওয়াবেন বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অনুব্রতও। নির্বাচনের আগেও তীব্র আক্রমণ করেছিলেন একে অপরকে। কিন্তু সে সব আর মনে করতে চান না অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘সাংসদ পদ থেকে নামিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছিল ওঁকে। আসলে তখন থেকেই মন ভেঙে গিয়েছিল ওঁর। বিজেপি-র কী রাজনীতি জানি না। জানি না কেন মন্ত্রিত্ব কেড়ে নিয়েছে। তবে ছেলে হিসেবে খারাপ নন বাবুল।’’
এর পরেই বাবুলের রাজনীতি ছাড়ার জন্য সরাসরি শুভেন্দুকে দায়ী করেন অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দুর জন্যই বিজেপি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন সবাই। ওই এক জনের জন্য সবাইকে চলে যেতে হচ্ছে। এখানে ১০ বছর থাকল, খেলো, মাখল, লেখাপড়া করল। তার পর ওখানে গিয়ে আমাদের বদনাম করছে। বিজেপি-র লোকজনও ভাবছেন, যে দলের মন্ত্রী ছিল, তাঁদের বিরুদ্ধেই কথা বলছে! যাঁরা এত দিন বিজেপি করেছেন, তাঁরা কিছুই পাননি। বাবুল তো অনেক দিন ছিল। সম্মান পেল কোথায়!’’
রাজনীতি ছাড়লেও তৃণমূল, কংগ্রেস বা সিপিএম-এ যোগ দেওয়ার ভাবনা নেই বলে শনিবার জানান বাবুল। কিন্তু রাতে আবার পোস্ট থেকে ওই অংশটি মুছে ফেলেন তিনি। বাবুলের তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা কতটা, তা জানতে চাইলে অনুব্রত বলেন, ‘‘উনি তৃণমূলে আসতে চাইলেও সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমি কলকাতার নেতা নই। নেত্রী বসে রয়েছেন। উনি সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি গ্রামের ছেলে, চাষির ঘরের ছেলে, আমার না অত বুদ্ধি আছে, না আছে অত বড় মাথা।’’
তবে বাবুল সাংসদ পদ ছাড়লে এ নিয়ে কথা বলবেন বলেও জানান অনুব্রত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শুনছি সাংসদ পদ ছেড়ে দেবেন। এখনও ছাড়েননি। ছাড়লে অনেক কথা বলার আছে।’’