প্রতীকী ছবি।
কয়লা শিল্পে একশো শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটে ভালই প্রভাব পড়ল পুরুলিয়ার দু’টি কয়লাখনি এবং একটি কোল ওয়াশারিতে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া ও দুবেশ্বরী কয়লাখলির মূল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান ধর্মঘটে সামিল শ্রমিক সংগঠনগুলির সদস্যেরা। ইসিএল-এর সিএমডি’র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘সামগ্রিক ভাবে এ দিন সংস্থার প্রায় ৫০ শতাংশ উৎপাদন মার খেয়েছে।’’
এআইইউটিইউসি’র নেতা নবনী চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘ধর্মঘট সর্বাত্মক সফল হয়েছে। পারবেলিয়ায় হাতে গোনা কয়েকজন শ্রমিক কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের ফিরতে হয়েছে। দুবেশ্বরীতে কোনও শ্রমিক কাজে যোগ দেননি।”
কয়লাখনির আধিকারিক ও নিরাপত্তারক্ষীদের কাজে যোগ দিতে বাধা দেয়নি শ্রমিক সংগঠনগুলি। দুই কয়লাখনি সূত্রের খবর, ধর্মঘটের কারণে এ দিন উৎপাদন কার্যত বন্ধ ছিল। সাঁওতালডিহি থানার ভোজুডি কোল ওয়াশারিতে ধর্মঘট সফল বলে দাবি শ্রমিক সংগঠনগুলির।
অভিযোগ, সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ-সহ আরও কিছু শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা ওয়াশারিতে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহের কাজে যুক্ত কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বাধা দেন। যার জেরে ভোর ৬ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বন্ধ ছিল কলোনিতে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, জল ও বিদ্যুৎ জরুরি পরিষেবার মধ্যে পড়ে। তা হলে কেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে? ওই দুই দফতরের কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ কলোনির বাসিন্দারা।
সূত্রের খবর, সেই ক্ষোভের কথা শুনে ধর্মঘটে যোগ দেওয়া অন্য কয়েকটি সংগঠনের নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেন। পুলিশ ও কোল ওয়াশারি কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে দুপুরের পরে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
সিআইটিইউ-এর ভোজুডি কোল ওয়াশারির নেতা ধনঞ্জয় বাউরির দাবি, ‘‘বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বিভাগের কর্মীরা স্বেচ্ছায় কাজে যোগ দেননি। আমরা কাউকে বাধা দিইনি।” তাঁর আরও দাবি, ‘‘সমস্যার কথা জেনে আমরাই উদ্যোগী হয়ে জল ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেছিলাম।’’
এআইইউটিইউসির জেলা সভাপতি দিলীপ কুমার মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করি না। যে কোন ধর্মঘটেই বিদ্যুত, জল, স্বাস্থ্যের মত জরুরি পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়। এ দিন যা ঘটেছে তা কাঙ্খিত ছিল না।”