বোলপুর মহকুমা প্রশাসনিক ভবনে। নিজস্ব চিত্র
গরিবদের জন্য রাজ্য সরকারের প্রকল্প আছে অনেক। তা সত্ত্বেও পাঁচ বছরের কম বয়সের বহু শিশু আজও অপুষ্টির শিকার। এই অবস্থায় শিশুদের পুষ্টি বাড়াতে রাজ্যের ছ’টি জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য বিশেষ খাদ্য-প্যাকেটের উদ্বোধন করলেন নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। সোমবার বোলপুর মহকুমা প্রশাসনিক ভবন থেকে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা—এই ছ’টি জেলা থেকে আসা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ৬টি স্টল দিয়েছেন এখানে। সেই স্টলগুলিরও উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
গরিব পরিবারের শিশুদের অপুষ্টি দূর করতে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ। সম্প্রতি বিধানসভায় শশীদেবী জানিয়েছিলেন, পুষ্টির গুণমানযুক্ত বিশেষ খাবারের প্যাকেট অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। এ দিন বোলপুর থেকে সেই পরিকল্পনারই সূচনা হল। বাচ্চাদের অপুষ্টি দূর করার জন্য গম, ছোলা, বাদাম ও চিনির গুঁড়োর মিশ্রণ ঘটিয়ে তৈরি করা হয়েছে খাবারের প্যাকেট। যার নাম ‘পুষ্টি’। অপুষ্টি দূর করতে এই ‘পুষ্টি’র প্যাকেট এ বার থেকে সপ্তাহে তিন দিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বাচ্চাদের দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সি স্কুল ছুট কিশোরীদেরও সপ্তাহে তিন দিন একটি করে পুষ্টির প্যাকেট দেওয়া হবে। আপাতত ওই ছয় জেলায় এই প্রকল্প চালু হবে বলে জানিয়েছেন শশী পাঁজা। এ দিন কিছু ‘পুষ্টি’র প্যাকেট শিশু ও শিশুর মায়েদের হাতে তুলেও দেন রাজ্যের মন্ত্রী।
শশী পাঁজার দাবি, ‘‘২০১১ সালের আগে প্রতি ১০০টি শিশুর মধ্যে ৩৪টি বা তারও বেশি পুষ্টিতে ভুগত বলে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই সংখ্যাটা অনেকটাই কমে গিয়েছে। এখন প্রতি ১০০ জনে দেখা যাবে, আটটি শিশু অপুষ্টির শিকার। সবার সহযোগিতা ফলে আজ এই সাফল্যে এসেছে।’’ অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রতি ‘বঞ্চনা’ নিয়েও কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত বঞ্চনা করে চলেছ। যার ফলে প্রকল্পের টাকা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সহায়িকা, দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের বেতনের ক্ষেত্রেও বঞ্চনা করা হচ্ছে।’’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজ কল্যাণ দফতরের সচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ, বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল , রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বোলপুরের অসিত মাল। উপস্থিত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের উদ্দেশে অনুব্রত বলেন, ‘‘আপনরা অনেক পরিশ্রম করেন, সে কথা আমরা জানি। ভাল পরিষেবাও দেন। আপনাদের সমস্যার কথা দরকার পড়লে জেলাশাসক থেকে
মন্ত্রীকে জানান। কিন্তু, কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন না।’’