বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
আবারও উত্তপ্ত বিশ্বভারতীর পরিবেশ। অভিযোগ, ২০১৯-২০ সালে বিশ্বভারতীতে ভর্তির প্রক্রিয়ায় অনেক দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির এই অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বভারতীরই অধ্যাপক পীযূষকান্তি ঘোষ। তাঁর দাবি, এর আগে তিনি বিষয়টি প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে জানিয়েছিলে। কিন্তু ফল পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে নতুন উপাচার্য সঞ্জয় মল্লিককেও একই অভিযোগ জানান পীযূষ। এর পর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভ্যন্তরীণ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অভ্যন্তরীণ তদন্তের পরেই পীযূষের অভিযোগটি যে সঠিক তা জানতে পারেন কর্তৃপক্ষ। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে হিসাবরক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সঞ্জয় ঘোষকে। তাঁর বদলে এই দায়িত্ব পান সৌমেন্দ্র সেন। গত মঙ্গলবার, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। এর পরেই শুরু হয় অশান্তি।
অভিযোগ, নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর সৌমেন্দ্রর কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন প্রাক্তন হিসাবরক্ষক সঞ্জয়। শুধু তাই নয়, ওই বিজ্ঞপ্তির পরে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বাড়িতেও জড়ো হন সঞ্জয়ের কয়েক জন অনুগামী। অভিযোগ, উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেন তাঁরা। এর পর, শান্তিনিকেতন থানায় খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ওসি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমান উপাচার্য জানান, “শুধুমাত্র সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। নতুন হিসাবরক্ষককে দায়িত্ব দিতে কিছুটা সময় এখনও লাগবে। তবে বিজ্ঞপ্তি যখন জারি হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে নিশ্চয়ই মানা হবে।” অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ-র দাবি, সঞ্জয়কে হিসাবরক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দিলে, প্রাক্তন উপাচার্যের নানা দুর্নীতি সকলের সামনে চলে আসবে। তাই সত্যি লুকোতে এই প্রতিবাদ চালাচ্ছেন সঞ্জয় এবং তাঁর অনুগামীরা।
তবে দুর্নীতির তথ্য এ ভাবে সামনে আসা এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাওয়ের কারণে বিশ্বভারতীতে যে আবারও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ভিবিইউএফএ-র অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে প্রাক্তন উপাচার্যের নিশ্চয়ই কোনও যোগ রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে প্রচুর পরিমাণ আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে সঞ্জয়ের মদতে। তাঁকে সরালে প্রাক্তন উপাচার্যের আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং বিভিন্ন বেআইনি কাজ প্রকাশ্যে আসবে এই আশঙ্কাতেই বিদ্যুৎ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ লোকজনেরা এই বিশৃঙ্খলা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।