—প্রতীকী ছবি।
ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্বে কি আমূল বদল আনবে সিপিএম? শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে বড় কোনও বড় বদল না হলে রাজ্য সম্পাদক ও সভাপতি— এই দুই পদেই নতুন মুখকে দেখা যেতে পারে। ২২-২৪ জানুয়ারি মালদহে হবে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন। ছাত্র নেতাদের নিয়ে ‘ফ্র্যাকশন কমিটি’র বৈঠকে পরবর্তী নেতৃত্বের নামের প্রস্তাব চাওয়া হয়। সিপিএম সূত্রে খবর, শুক্রবারের সেই বৈঠকে ছাত্রনেতাদের আলোচনায় অনেক নাম উঠে এলেও তিন জনের নামে পাল্লা ভারী।
তাঁরা কারা? সূত্রের খবর, একাধিক জেলার ছাত্রনেতা পরবর্তী রাজ্য সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে কলকাতার দেবাঞ্জন দে এবং উত্তর ২৪ পরগনার আকাশ করের নাম প্রস্তাব করেছেন। একই ভাবে কোচবিহারের ছাত্রনেতা প্রণয় কাঞ্জির নামও প্রস্তাব করেছেন অনেকে। এ বাদেও বেশ কিছু নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হুগলির নবনীতা চক্রবর্তী, বাদশা দাস, কলকাতার মহম্মদ আতিফ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঋজুরেখ দাশগুপ্ত, অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী। কম হলেও পূর্ব বর্ধমানের ছাত্রনেতা অনির্বাণ রায়চৌধুরীর নামও বলেছেন কেউ কেউ।
সিপিএম সূত্রে খবর, বর্তমান রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ও সভাপতি প্রতিক-উর রহমান দু’জনেই বৈঠকে বলেছেন, তাঁরা দায়িত্ব ছেড়ে নতুনদের জায়গা করে দিতে চান। দলের নেতারাও বার্তা দিয়েছেন, তাঁরাও চান নতুন নেতৃত্বকে তুলে আনতে। উল্লেখ্য, সৃজন এবং প্রতিক-উর দুই মেয়াদ রাজ্য সম্পাদক ও সভাপতির পদে রয়েছেন।
তবে এখানে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ ও দলীয় সমীকরণের বিষয় রয়েছে। এসএফআইয়ের মুখপত্রের সম্পাদক পদে রয়েছেন দীপ্তজিৎ দাস। তিনি নিজে চিকিৎসক। দীপ্তজিৎ উত্তর ২৪ পরগনার নেতা। তাঁকে যদি ওই পদে রেখে দেওয়া হয়, তা হলে আকাশের দায়িত্ব পাওয়া মুশকিল। কারণ, একই জেলার দু’জনকে রাজ্যের শীর্ষ পদে বসানোর রেওয়াজ সিপিএমে নেই। প্রসঙ্গত, সৃজন এবং প্রতিক-উর কেউই ওই বৈঠকে পরবর্তী নেতৃত্বের নামের বিষয়ে তাঁদের প্রস্তাব জানাননি। কারণ, তাঁরা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী পৃথক ভাবে দু’জনের মতামত শুনে তার পর সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এই অনেক নামের মধ্যে প্রস্তাবের সংখ্যায় কম হলেও বর্ধমানের অনির্বাণের নাম নিয়ে জল্পনা রয়েছে। তার কারণ, এই নেতাদের মধ্যে অনির্বাণই একমাত্র যিনি আন্দোলন করতে গিয়ে বেশ কিছু দিন জেল খেটেছিলেন। ফলে একেবারে আন্দোলনের ‘মুখ’ তিনি। জেলে থাকা অবস্থায় জেলা সম্পাদক হয়েছিলেন ছিপছিপে চেহারার এই নেতা।
তবে এ-ও ঘটনা, সিপিএমে যখন অনেক নাম নিয়ে আলোচনা, জল্পনা চলে, তখন তারা তৃতীয় ভারসাম্যের রাস্তায় হাঁটে। অনেকে বলছেন, এই রকমও হতে পারে সৃজন বা প্রতিক-উরের মধ্যে এক জনকে রেখে দিয়ে এক জন নতুনকে তুলে আনতে পারে। তবে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর মনোভাব নতুন নেতৃত্বকে সামনে আনা। সবটাই স্পষ্ট হবে ২৪ জানুয়ারি। নামে সিলমোহর দেবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী।