purulia

বৈঠকের আমন্ত্রণ নিয়ে প্রকাশ্যে বিভাজন! চর্চা

গত বুধবার থেকে আদ্রা ডিভিশনের আদ্রা-চান্ডিল শাখার কুস্তাউর স্টেশনের পাশাপাশি পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের কুস্তাউর মোড় অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪৪
Share:

খেমাশুলিতে আন্দোলনে নামা কুড়মি সমাজ রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে। — ফাইল চিত্র।

জনজাতির স্বীকৃতির দাবিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলন প্রত্যাহার হলেও দুই সংগঠনের মধ্যে ‘বিভাজন’ প্রকাশ্যে এসে পড়ল। পুরুলিয়ায় আন্দোলনরত আদিবাসী কুড়মি সমাজ রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে অস্বীকার করলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে আন্দোলনে নামা কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে। এই মর্মে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁদের লিখিত চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

গত বুধবার থেকে আদ্রা ডিভিশনের আদ্রা-চান্ডিল শাখার কুস্তাউর স্টেশনের পাশাপাশি পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের কুস্তাউর মোড় অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। আন্দোলন শুরুর আগে জেলা প্রশাসন একাধিক বৈঠকে তাঁদের অবরোধ থেকে সরে আসার অনুরোধ জানালেও কাজ হয়নি। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের তরফে ‘ফার্দার জাস্টিস কমেন্ট’-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর দাবিতে অনড় ছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ।

শনিবার দুপুরের দিকে আন্দোলনকারী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন বৈঠকে বসলেও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। রাতে ফের বৈঠক শুরু হয়। সূত্রের খবর, রাতভর বৈঠকের পরে রবিবার সকালে সংগঠনের মূল মানতা অজিত মাহাতো বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। পরে, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কুস্তাউরে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা করলেও প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপ তৈরির অভিযোগ আনেন তিনি।

Advertisement

সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, “আলোচনার মাধ্যমেই তাঁরা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁদের বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই মর্মে তাঁদের চিঠিও দেওয়া হয় যে, তাঁরা চাইলে মুখ্যসচিবের সঙ্গে তাঁদের বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু তাঁরা সেই চিঠি নেননি।”

অজিতের ব্যাখ্যা, “আমরা ওই চিঠি নিইনি, কারণ রাজ্য সরকারের সঙ্গে আমাদের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক হয়েছে। তবে কোনও ফল হয়নি। তা ছাড়া, আমরা তো বলেইছি যে, রাজ্যের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র যে ব্যাখ্যা চেয়েছে, রাজ্য সেই রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে পাঠাক। কিন্তু ২০১৭ সালের পরে থেকে রাজ্য আজওতা পাঠায়নি।”

তাঁর আরও দাবি, “গত সেপ্টেম্বরে আমরা যখন এই কুস্তাউর স্টেশন অবরোধ করি, তখন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে চিঠি পাঠানোর কথা বলা হলেও তা পাঠানো হয়নি। তাই বৈঠকে যাওয়ার আগ্রহ দেখাইনি।”

এ দিকে, খেমাশুলিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গের কাছে সোমবার জেলা প্রশাসনের তরফে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সংগঠনের তরফে তা গ্রহণও করা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বৈঠক হওয়ার কথা।

এ নিয়ে ওই সংগঠনের নেতা রাজেশ মাহাতো বলেন, “আজ আমরা রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করেছি। যে দাবিতে আমাদের আন্দোলন, তা নিয়ে মুখ্যসচিব বৈঠক করবেন বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। আমরা পাঁচ জন প্রতিনিধি মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেব।”

যদিও আদিবাসী কুড়মি সমাজের বৈঠকের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে রাজেশ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেন, “এটা তাঁদের বিষয়। তাঁরাই বলতে পারবেন।” কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গের বৈঠকের আমন্ত্রণ গ্রহণ করা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতেচাননি অজিতও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement