ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
মায়ের বহু দিনের ইচ্ছা কুম্ভমেলায় গিয়ে স্নান করার। কিন্তু সেই সুযোগ হয়নি কখনও। পুত্র সে কথা জানতেন। তাই ৯২ বছর বয়সি বৃদ্ধাকে গাড়িতে বসিয়ে তা নিজেই টেনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ৬৫ বছরের পুত্র। সমাজমাধ্যমের পাতায় সর্বত্র তাঁর ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে বৃদ্ধ পুত্রের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন নেটব্যবহারকারীদের অধিকাংশ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ৬৫ বছর বয়সি সেই বৃদ্ধের নাম চৌধরি সুদেশ পাল মালিক। উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগরের বাসিন্দা তিনি। গত ২৫ বছর ধরে হাঁটুর সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সুদেশের দাবি, তাঁর মায়ের আশীর্বাদে সেই ব্যথা সেরে গিয়েছে। তাই মায়ের বহু বছরের ইচ্ছা পূরণ করতে প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সুদেশ। একটি গাড়িতে তাঁর মাকে বসিয়ে নিজেই সেই গাড়িটি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সড়কপথে হেঁটে প্রয়াগরাজ পৌঁছতে ১৩ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সুদেশ। এই ভিডিয়োটি দেখে সুদেশের উদ্দেশে এক নেটাগরিক লিখেছেন, ‘‘আপনার মা খুব ভাগ্যবতী। আপনি যে মায়ের ইচ্ছা মেটাতে এত পরিশ্রম করছেন তা প্রশংসার যোগ্য। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন।’’
ত্রিবেণী সঙ্গমে মৌনী অমাবস্যায় স্নান করতে দূরদূরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা ভিড় করেছিলেন মহাকুম্ভে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রয়াগরাজে ভিড় বাড়তে থাকে। প্রশাসনের তরফে বার বার ঘোষণা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে মেলাপ্রাঙ্গণের অনেক ব্যারিকেড ভেঙে গিয়েছে। মঙ্গলবার মাঝরাত থেকেই বহু পুণ্যার্থী ত্রিবেণী সঙ্গমে ভিড় করতে শুরু করেন। রাত ২টো নাগাদ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। দুর্ঘটনার পর পরই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। আহতদের উদ্ধার করে মেলাপ্রাঙ্গণেরই হাসপাতালে আনা হয়।
মেলাপ্রাঙ্গণের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অনেককেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। গত ১৯ জানুয়ারি কুম্ভমেলায় আগুন ছড়িয়েছিল। ১৯ নম্বর সেক্টরে গীতা প্রেসের তাঁবু জ্বলে উঠেছিল দাউদাউ করে। সেখান থেকে আশপাশের কিছু তাঁবুতেও আগুন ছড়ায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫০টিরও বেশি তাঁবু। তাঁবুগুলির ভিতর থেকে পর পর সিলিন্ডার ফাটার শব্দও পাওয়া যাচ্ছিল। মহাকুম্ভ উপলক্ষে প্রয়াগরাজে এই মুহূর্তে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড়। বিস্তীর্ণ মেলাপ্রাঙ্গণকে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সর্ব ক্ষণ মোতায়েন রয়েছেন দমকলকর্মীরা। অগ্নিকাণ্ডের পর পদপিষ্টের ঘটনা কুম্ভমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।