বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি বিশিষ্টদের। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উপলক্ষে মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে আসছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তার আগে আবার অশান্তির বাতাবরণ। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেওয়ার পর পরই ৭ অধ্যাপককে শো কজ় করেছেন কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অপসারণ দাবি করে রাষ্ট্রপতিকে খোলা চিঠি দিয়েছেন প্রবীণ আশ্রমিকরা। তাঁদের পাশাপাশি চিঠিতে নাম রয়েছে মনোজ মিত্র, শুভাপ্রসন্ন, কবীর সুমন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টদের।
মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে ২০২২ সালের শিক্ষাবর্ষে উর্ত্তীর্ণ পড়ুয়াদের জন্য সমাবর্তন অনুষ্ঠান রয়েছে। সেখানে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। অভিযোগ, তার পরেই শো-কজ় করা হয় কয়েক জন অধ্যাপককে। শেষমেশ ৭ অধ্যাপককে শো কজ় করা হয়েছে। এঁদের নাম সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, তথাগত চৌধুরী, কৌশিক ভট্টাচার্য, অরিন্দম চক্রবর্তী, শরৎকুমার জেনা, সমীরণ সাহা ও রাজেশ কেভি।
সোমবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে একটি চিঠিতে। রাষ্ট্রপতিকে লেখা ওই চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অনিয়ম’, একাধিক অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং পড়ুয়াকে শো কজ়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। মনোজ মিত্র, সুপ্রিয় ঠাকুর, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, কবীর সুমন, জয় গোস্বামী, গৌতম ঘোষ, শুভাপ্রসন্ন, সুবোধ সরকার-সহ বিশিষ্টদের নাম রয়েছে সেখানে। চিঠিতে উপাচার্য চক্রবর্তীর সমালোচনা করা হয়েছে। রয়েছে সম্প্রতি অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতীর জমি-বিবাদের কথাও। অভিযোগের সুরে চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্বভারতীর একাধিক আর্থিক দুর্নীতির কথা। উপাচার্যের আমলে কলকাতা হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের প্রায় ১৩০টি মামলার প্রসঙ্গ এবং প্রায় ৪০০ জন কর্মী-অধ্যাপক এবং পড়ুয়ার উপর শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কথা।
অধ্যাপক সংগঠন দাবি করে, নিয়ম-কানুন ভেঙে কাজ করছেন বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য। আর্থিক দুর্নীতি, কর্মীদের বরখাস্ত পেনশন এবং বেতন আটকে দেওয়া-সহ বহু অভিযোগ রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। অধ্যাপক এবং অশিক্ষক কর্মীরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সব মিলিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন উপাচার্য। জরুরি প্রতিকার মূলক পদক্ষেপ করতে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়েছেন ফ্যাকল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতিকে হস্তক্ষেপ দাবি করায় নিয়ম-কানুন ভেঙে অধ্যাপকদের শো কজ় করে প্রতিহিংসাপ্রবণ কাজ করছেন উনি (বিদ্যুত্ চক্রবর্তী)।’’ যদিও এ নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।