Bankura Town

সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি বিক্রি মোটা টাকায়! বাঁকুড়ায় তদন্তে নামল পুর দফতর

আবাস যোজনায় স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতির অভিযোগে যখন সারা রাজ্য উত্তাল, ঠিক তখনই ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে তৈরি বাড়ি নিয়ে বড়সড় বেনিয়মের অভিযোগ সামনে এল বাঁকুড়া শহরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৩৬
Share:

এই বাড়ি ঘিরে বিতর্ক। আগের মালিক বলছেন, সরকারি প্রকল্পে তৈরি বাড়ি বিক্রি করা যায় না জানলে প্রকল্পের সুবিধাই নিতেন না। —নিজস্ব চিত্র

সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ উঠল বাঁকুড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। বিক্রির কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন বীরেন লোহ নামে ওই ব্যক্তি। বিষয়টি জানার পর বাঁকুড়া পুরসভার নজরে আনেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। পুর দফতর আশ্বাস দিয়েছে পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

আবাস যোজনায় স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতির অভিযোগে যখন সারা রাজ্য উত্তাল ঠিক তখনই ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে তৈরি বাড়ি নিয়ে বড়সড় বেনিয়মের অভিযোগ সামনে এল বাঁকুড়া শহরে। সূত্রের খবর, শহরাঞ্চলে বাড়ি তৈরির জন্য সরকারি প্রকল্পে ২০১৫–’১৬ অর্থবর্ষে আর্থিক সাহায্য পান বীরেন। সরকারি প্রকল্পে পাওয়া টাকায় নিজের জমিতে বাড়িও তৈরি করেন। কিন্তু এখন অভিযোগ উঠেছে, বীরেন গত বছরের ১১ অগস্ট মোটা অঙ্কের টাকায় বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন সন্দীপ দাস নামে এক ব্যাক্তিকে।

উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি উপভোক্তারা বিক্রি করতে পারেন না। তা হলে বীরেন কী ভাবে তা বিক্রি করলেন তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে পেশায় লটারি বিক্রেতা বীরেন নিজে বলেন, “যদি আগে থেকে জানতাম যে, কোনও অবস্থাতেই সরকারি প্রকল্পের বাড়ি বিক্রি করা যায় না, তা হলে আমি ওই প্রকল্পের সুবিধাই নিতাম না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমার বনিবনা না হওয়ায় বাড়িটা বিক্রি করে দিই। ওই এলাকায় থাকলে আমার প্রাণ সংশয় হতে পারে। সে জন্য আমি ওই বাড়িটি ৯ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে অন্য জায়গায় বাড়ি কিনে বসবাস করছি।”

Advertisement

বাড়িটির ক্রেতা সন্দীপ বলেন, “বাড়িটি জেনেশুনেও কিনেছিলাম। জমির সমস্ত নথিতে নাম পরিবর্তনও হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই ধরনের বাড়ি যদি বিক্রি করার নিয়ম না থাকে তা হলে বিক্রির সময়ই তা সরকারের আটকে দেওয়া উচিত ছিল।”

প্রথমে বাড়ি বিক্রির বিষয়টি রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব জলি চৌধুরীর নজরে আনেন স্থানীয় কাউন্সিলার দেবাশিস লাহা। তাঁর কথায়, “ওই বাড়িটি বিক্রি হয়েছে সে সম্পর্কিত সমস্ত নথি সংগ্রহ করে আমি বাঁকুড়া পুরসভা এবং পুর ও নগোন্নয়ন দফতরকে জানিয়েছিলাম।’’ কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘বাড়িটির উপভোক্তা দলিলে বাড়ি বিক্রির দাম ৯ লক্ষ টাকা উল্লেখ করলেও আসলে বাড়িটি বিক্রি করা হয়েছে মোট ১৭ লক্ষ টাকায়।” অন্য দিকে, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব বলেন, “সাধারণত এই ধরনের বাড়ি বিক্রি করা যায় না। দু’ একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাঁকুড়া পুরসভাকে বলা হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement