গুঁড়িয়ে দিয়ে ট্রাক ফেলে চম্পট 

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খবর দেওয়ার প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০১:১৯
Share:

(বাঁ দিক থেকে) ব্রাহ্মণডিহা গ্রামের বাড়িতে বরের মা। বাঁকুড়া মেডিক্যালে কনের মা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অষ্টমঙ্গলায় যাওয়ার পথে নবদম্পতির গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হল পাথরবোঝাই ট্রাকের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল বধূর স্বামী, শ্বশুর ও জেঠতুতো দাদার। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি নববধূ। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া সদর থানার কাশীবেদ্যা এলাকায়, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া (৬০-এ) জাতীয় সড়কে। মৃতেরা হলেন বধূর স্বামী বিজয় পাল (৩০), শ্বশুর সঞ্জয় পাল (৫২)। তাঁরা সারেঙ্গার ব্রাহ্মণডিহার বাসিন্দা। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বধূর জেঠতুতো দাদা মৃত্যুঞ্জয় খাঁর (২৭)। তিনি হুড়া থানার রামপুরের বাসিন্দা।

Advertisement

গত ২১ জুন রামপুরের যুবতী সান্ত্বনার সঙ্গে বিয়ে হয় বিজয়ের। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের গাড়ি নিজেই চালিয়ে স্ত্রী, শ্যালক ও বাবাকে নিয়ে রামপুরে আসছিলেন বিজয়। তাঁর পাশের আসনে বসেছিলেন সান্ত্বনা। জাতীয় সড়ক ধরে গাড়ি যাচ্ছিল। কাশীবেদ্যা মোড় থেকে কয়েকশো মিটার দূরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। উল্টো দিক থেকে আসা একটি পাথরবোঝাই ট্রাক মুখোমুখি গাড়িতে ধাক্কা দেয়। ট্রাকটির বিশেষ ক্ষতি না হলেও ছোট গাড়ির ইঞ্জিন কার্যত গুঁড়িয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অনেক দূর থেকে দুর্ঘটনার শব্দ পাওয়া গিয়েছিল। তা শুনেই ছুটে আসেন সবাই। ঘটনার পরেই ট্রাক ফেলে চম্পট দেয় চালক ও খালাসি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরে গাড়ির ভিতরে থাকা লোকজন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। গাড়ির দরজা খোলা যাচ্ছিল না। স্থানীয় লোকজনই শাবল দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে উদ্ধারের কাজ শুরু করেন। খবর যায় পুলিশে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খবর দেওয়ার প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। যদিও পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ততক্ষণে স্থানীয় বাসিন্দারাই একটি গাড়ি ডেকে জখম যাত্রীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্স এসে পড়ায় তাতে জখম সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, বিজয়, মৃত্যঞ্জয় ও সঞ্জয়বাবুর মৃত্যু হয়েছে। সান্ত্বনাকে ভর্তি করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা।

Advertisement

ঘটনাস্থলে পুলিশের দেরিতে আসা ও সময়ে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে কাশীবেদ্যা এলাকার মানুষ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। অবরোধকারীদের দাবি, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া (৬০-এ) জাতীয় সড়কটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। তাই এই এলাকায় অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দিতে হবে। পুলিশের আশ্বাসে প্রায় আধঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি গাড়ি আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement