প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে আসছে রিমা সাউ। নিজস্ব চিত্র
শুধু ইচ্ছেশক্তির জোরেই পরীক্ষা দিল বোলপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রিমা সাউ। বাড়ি বোলপুরের মকরমপুরে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের দেড় বছর পরে ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত হয় রিমা। সেই সময় ভুল চিকিৎসার কারণে মাত্র দেড় বছর বয়স থেকে রিমার হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে বহু জায়গায় চিকিৎসা করানো হলেও রিমা আর আগের মতো হাঁটতে-চলতে পারে না। রিমার বাবা কৈলাস সাউ পেশায় টিকিট বিক্রেতা। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় বড় কোনও জায়গায় চিকিৎসা করানোর সুযোগও হয়ে ওঠেনি। যার ফলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হয়ে পড়ে রিমা।
এই সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে শুধু মনের জোর নিয়েই এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে রিমা। উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়েছে বোলপুর শ্রীনন্দা উচ্চবিদ্যালয়ে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হাওয়ায় এ দিন হুইলচেয়ারে বসেই প্রথম দিনের পরীক্ষা দেয়। সম্পূর্ণ আলাদা একটি ঘর ও পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে। প্রথম দিন পরীক্ষা দিয়ে মা, ঠাকুমা, ভাইকে সঙ্গে নিয়ে হাসিমুখে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল রিমাকে।
পরীক্ষা কেমন হয়েছে, জিজ্ঞাসা করতে রিমা মাথা নেড়ে জানায় ভাল হয়েছে। সব প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছে। রিমার মা রুবিদেবীর কথায়, ‘‘মেয়ের লড়াই আজ আমাদের লড়াই হয়ে উঠেছে। সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে, এটাই সবচেয়ে বড় গর্বের।’’
শ্রীনন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেয়েটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশ মতো আলাদা ঘরে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করানো হয়েছে। পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেটিও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’