গ্রাম ছেড়ে বাতাসপুরে আশ্রয় নিয়েছেন জহুরা বিবি। নিজস্ব চিত্র
বগটুইয়ের ঘরছাড়াদের জন্য খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছেন সাঁইথিয়ার বাতাসপুরের বাসিন্দারা। কিন্তু ‘ভুখ’ লাগে না ষাটোর্ধ্ব জহুরা বিবির। গত সোমবার বগটুই গ্রামে নৃশংস ঘটনার পর জীবিত বেশ কয়েক জন আশ্রয় নিয়েছেন বীরভূমেরই সাঁইথিয়ার বাতাসপুর গ্রামে। তাঁদেরই এক জন জহুরা বিবি। জহুরার নাতনি এবং মেয়ে দু’জনেরই পুড়ে মৃত্যু হয়েছে গত সোমবার রাতে। হাড়হিম করে দেওয়া সেই ঘটনার স্মৃতি এখনও ভুলতে পারছেন না জহুরা।
বগটুই-কাণ্ডে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে সেখানকার বাসিন্দা মিহিলাল শেখের মা, স্ত্রী এবং মেয়ের। সেই মিহিলাল বগটুই ছেড়ে সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছেন সাঁইথিয়ার বাতাসপুর গ্রামে। সেই দলেই রয়েছেন জহুরা। তিনি মিহিলালের আত্মীয়া। তাঁদের সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামে চলছে রান্নার আয়োজনও। কিন্তু জহুরার কথায়, ‘‘আমার শরীর দুর্বল। আমি দুশ্চিন্তায় মরে যাচ্ছি। কিছু খেতে পারছি না। পাঁচটা পরিবারের মৃত্যুর পর আমি একেবারে শেষ। আমার আর ভুখ লাগে না। খেতে মন চাইছে না। বমি চলে আসছে।’’
রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন জহুরা বিবি। সে জন্য আমোদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয় বাতাসপুরে। তাঁরা জহুরার চিকিৎসা করেন। মেডিক্যাল টিম সূত্রে জানা গিয়েছে, জহুরা উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, সুগার এবং হাঁটুর ব্যথায় ভুগছেন। তাঁর চিকিৎসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ওই দলটির সূত্রে। জহুরা আরও বলছেন, ‘‘আমি মনে হয়, সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারব না। ডাক্তার দেখে ওষুধ দিয়েছেন আজ।’’
রবিবার যে চিকিৎসক জহুরাকে পরীক্ষা করেছেন সেই মহম্মদ শাহিদ আলির কথায়, ‘‘উনি আগে থেকেই অসুস্থ। উচ্চ রক্তচাপ-সহ ওঁর নানা সমস্যা আছে। টেনশনে ওঁর ঘুমও আসছে না।’’