জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনারুলকে নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র রয়েছে। বগটুই-কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি ধৃত তৃণমূল নেতা আনিরুল হোসেন।
তদন্ত প্রভাবিত করছে বিজেপি। একযোগে কাজ করছে সিবিআই ও বিজেপি। বগটুই-কাণ্ডে বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। তাঁর দাবি, নিরপেক্ষ তদন্তের পদক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু এখন বিজেপি মামলা প্রভাবিত করছে।
বগটুই-কাণ্ডে ধৃত আনারুল হোসেন-সহ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-র আধিকারিকরা। রবিবার তাদের রামপুরহাট থানা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওই শহরের পিএইচই-র গেস্ট হাউসে। সেখানেই বগটুই-কাণ্ডের তদন্তের জন্য সিবিআইয়ের অস্থায়ী দফতর তৈরি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আনারুল হোসেন-সহ মোট ২১ জন গ্রেফতার হয়েছে।
বগটুই-কাণ্ডে আহতদের বয়ান রেকর্ড করার জন্য রামপুরহাট হাসপাতালে গেলেন সিবিআই আধিকারিকরা। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এক নাবালিকা ও তিন মহিলা। সে দিন কী হয়েছিল, কী কী চাক্ষুষ করেছেন, আহতদের সেই বয়ান রেকর্ড করবে সিবিআই।
বগটুই-কাণ্ডে রামপুরহাটে রয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। ধৃত আনারুল ইসলামের ভূমিকা কী ছিল, তার তদন্ত করছেন তাঁরা। রবিবার আহতদের বয়ান রেকর্ড করার জন্য রামপুরহাট হাসপাতালে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল, তার সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছে সিবিআই। পুলিশের কাছ থেকে নেওয়া হবে এই সিসিটিভি ফুটেজ। সিসিটিভি-তে যাদের দেখা যাবে,তাদের চিহ্নিত করতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা।
বগটুইয়ের ঘটনায় তদন্তকারী সিবিআই আধিকারিকদের নিরাপত্তারক জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হল। রাজ্য পুলিশে নয়, বগটুইয়ে সিআরপিএফ এখন সিবিআই আধিকারিকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ৩৫ জন সিআরপিএফ নিয়োগ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের জন্য।
বগটুইয়ের পরে শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল সামনে এসেছে। তা ছাড়াও, সম্প্রতি দুই কাউন্সিলর-সহ খুনের ঘটনাগুলিতে রাজনৈতিক শত্রুতার বিষয়ও উঠে এসেছে। তবে প্রশাসনের দাবি, এই গোয়েন্দা তৎপরতা মূলত তথ্য সংগ্রহ (ইন্টেলিজেন্স)। তদন্তের সঙ্গে এর কোনও যোগসূত্র নেই। বগটুই-কাণ্ডে গাফিলতির জন্য রামপুরহাটের এই দুই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বীরভূম জেলার উচ্চ পদস্থ কয়েক জন পুলিশকর্তার ভূমিকাও সিবিআইয়ের আতসকাচের নীচে।
গত সোমবার রামপুরহাটের বগটুইয়ে বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। ওই রাতেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে সাত জনের মৃত্যু হয় একই গ্রামে। তার পর ঘটনার তদন্তভার পুলিশের হাত থেকে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর হাতে। শেষে হাই কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-র হাতে গিয়েছে তদন্তভার। কিন্তু গ্রাম থেকে ভয়ের আবহ সরেনি। গ্রামের অনেকে এখনও ঘরছাড়া। যাঁরা আছেন তাঁদের কেউ কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভিটে ছাড়ার।