প্রতিবাদে: আলাপিনী মহিলা সমিতির সদস্যারা। নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণ ও বিধানসভা নির্বাচনের আবহে কয়েক মাস পথে নেমে প্রতিবাদ বন্ধ রাখার পর আবারও পথে নামল বিশ্বভারতীর আলাপিনী মহিলা সমিতি।
সমিতির যে বিবিধ বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়েছে শতাব্দী প্রাচীন এই সমিতির, তার তালিকাও পোস্টার আকারে তুলে ধরা হয় এ দিন। সমিতির সদস্যা মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাইলে আশ্রমের বাইরে কোনও ব্যক্তিগত পরিসরে এই স্মরণসভা আয়োজন করতে পারতাম। কিন্তু তা সমিতির প্রতি ও কল্যাণীদির প্রতি সুবিচার হত না। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আমাদের প্রত্যেকটি প্রতিবাদ সভায় তিনি উপস্থিত থাকতেন। তাই তাঁর স্মরণসভাও আয়োজিত হল সেই প্রতিবাদের স্থানে!”
২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর হঠাৎই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আলাপিনীকে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, পাঠভবন বা আনন্দ পাঠশালার প্রয়োজনে গত ৬৪ বছর ধরে আলাপিনীর অধিবেশন কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত ‘নতুন বাড়ি’ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। আলাপিনী এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেও এ বছর ১ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ ‘নতুন বাড়ি’র দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। যার প্রতিবাদে ওই অধিবেশন কক্ষ সংলগ্ন মূল দরজার বাইরে রাস্তার ধারে মাটিতে বসেই বারবার প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা গিয়েছে সমিতির ষাটোর্ধ্ব সদস্যাদের। এই সময়কালে তাঁরা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, বিশ্বভারতীর আচার্য, রেক্টর ও পরিদর্শক, জাতীয় মহিলা কমিশন-সহ বিভিন্ন স্তরে সমস্যার সমাধানের আবেদন জানালেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
তবে সদস্যারা সেই অবস্থাতেও নিয়মিত প্রতিবাদ চালিয়ে গেছেন। মাঝে করোনা সংক্রমণের বাড়াবাড়ির জন্য বেশ কিছুদিন এই কর্মসূচি স্থগিত ছিল। এ দিন আবারও গানে, কথায়, স্মৃতি রোমন্থনে কল্যাণী মিত্রের স্মরণসভার মঞ্চই কার্যত হয়ে উঠল সমিতির প্রতিবাদের মঞ্চ।
মনীষাদেবীর কথায়, “আবার নিয়মিত এই প্রতিবাদ চলবে। কর্তৃপক্ষ আমাদের অধিবেশন কক্ষ থেকে দূরে রাখতে পারেন, কিন্তু আশ্রম থেকে দূরে রাখতে পারবে না।’’ এর পরে স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে সমিতির সমস্যার কথা বিধানসভা ও লোকসভায় তুলে ধরার আবেদন জানানোর ভাবনাচিন্তা চলছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে, আলাপিনীর এ দিনের কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।