ছিল বোর্ড (বাঁ-দিকে)। এখন নেই। লোবায়। নিজস্ব চিত্র
অফিসে ‘তালা’ ঝুলছেই। রাতারাতি খুলে নেওয়া হয়েছে ‘বোর্ড’ও। রবিবার বিকেল থেকে দুবরাজপুরের লোবায়, প্রস্তাবিত খোলামুখ কয়লাখনি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ডিভিসি-র ভাড়া নেওয়া অফিস ঘরের এমন ‘ছবি’ ঘিরেই সংশয় তৈরি হয়েছে এলাকায়। এলাকবাসীর প্রশ্ন, তবে কি ডিভিসি খনি গড়ার দায়িত্ব থেকে ‘হাত গুটিয়ে’ নিল! জেলা প্রশাসনের এক কর্তা যদিও বলছেন, ‘‘এমন কিছু হলে অন্তত জেলা প্রশাসন জানত। কিন্তু ডিভিসি-র তরফে এমন কোনও পদক্ষেপের কথা জানানো হয়নি।’’
লোবায় খোলামুখ কয়লাখনি তৈরির চেষ্টা চলছে বহুদিন ধরেই। অতীতে এ কাজে যৌথ ভাবে দায়িত্ব পেয়েছিলে রাষ্ট্রায়ত্ত ডিভিসি এবং বেসরকারি সংস্থা এমটা। কিন্তু প্রায় ৭০০ একর জমি কিনলেও সে কাজ এগোয়নি। ২০১৪ সালে কোল ব্লক বাতিলের পরে একক ভাবে খনি গড়ার দায়িত্ব পায় ডিভিসি। ২০১৬ সাল থেকে প্রশাসনের সহযোগিতায় সেই পথেই কাজ এগোচ্ছে। খনি গড়ায় মূল পর্ব, জমি জরিপের কাজ চলাকালীন বছর দুই আগে লোবা কালী মন্দির সংলগ্ন এলাকায়
একটি ঘর ভাড়া নিয়ে অফিস তৈরি করে ডিভিসি। সেই কার্যালয় ‘বন্ধ’ হতেই চর্চা শুরু হয়েছে। ডিভিসি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য মেলেনি। তবে, কোভিড পরিস্থিতিতে কোনও কাজ হচ্ছে না বলেই আপাতত অফিস বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। লোবার মানুষের প্রশ্ন, করোনা আবহে কাজ হবে না সেটা তো জানা। কিন্তু তাই বলে সংস্থার নামাঙ্কিত বোর্ড খোলার প্রয়োজনীয়তা কী। আদৌ কি খনি গড়ায় সদিচ্ছা আছে ডিভিসি-র? লকডাউন ঘোষণার আগেও যে বিশেষ কাজ হচ্ছিল, এমনও নয়। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, নামেই একটি পুনর্বাসান প্যাকেজ ঘোষণা করলেও, কী দামে জমিদাতাদের কাছে জমি নেওয়া হবে, তা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা কাটেনি।
ডিভিসি-র সঙ্গে বৈঠকে জেলা প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়েছিল, জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মতামত নিয়েই জমির দাম ঠিক করতে হবে। সেই নির্দেশের পর ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখ থেকে চার দিন চারটি গ্রামে শিবির করার আয়োজন করেছিল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ডিভিসি। সূত্রের খবর, করোনা আতঙ্কে প্রশাসনকে কিছু না জানিয়েই সেই শিবির বাতিল করে ডিভিসি। তার পর থেকে মাঝে মধ্যে লোবায় এক-আধ দিন অফিস খুলেছিল। বাকি দিন তালা বন্ধই থাকত কার্যালয়। কিন্তু বোর্ডটা ঝুলছিল। এ বার সেটাও খুলে নেওয়া হল।