(বাঁ দিক থেকে) বৃষ্টি মাল, সামরিন ইসলাম, তোড়া দাস নিজস্ব চিত্র
ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর আয়োজিত জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে উৎকর্ষতার বিচারে দেশের ১৬টি সেরা প্রকল্পের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে স্থান পেল মাড়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি প্রকল্প। একই সঙ্গে মাড়গ্রামেরই ১০ বছর বয়সী তোড়া দাস জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসীর সর্বকনিষ্ঠ ‘খুদে বিজ্ঞানী’ হিসেবে মনোনিত হয়েছে। বুধবার মাড়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এবং মাড়গ্রাম ১+২ প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মেল করে এ খবর জানিয়েছেন জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের আয়োজকেরা। আমদাবাদে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্তরের এই প্রতিযোগিতার সাফল্যে খুশি জেলা প্রশাসন থেকে জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের জেলার আয়োজকেরা।
জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে এ বার বীরভূম জেলার মাড়গ্রাম থেকে চারটি প্রকল্প উপস্থাপন করার ডাক পেয়েছিল খুদেরা। এই প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তরে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী প্রকল্প উপস্থাপন করে। বাকি তিনটি প্রকল্পও একই স্কুলের। দু’টি স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩-৭ জানুয়ারি নাগপুরে জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে মাড়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি মাল প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে কী ভাবে বীজ সংরক্ষণ ও বীজের অঙ্কুরোদ্দম করা যায় তা নিয়ে ‘বীজ ব্যাঙ্ক’ প্রকল্পটি উপস্থাপন করে। ওই একই প্রকল্প পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সামরিন ইসলাম গত ২১-৩১ জানুয়ারি গুজরাটের আমদাবাদে জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে উপস্থাপন করে। এটিই দেশের সেরা ১৬-এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে স্থান পাওয়া একমাত্র প্রকল্প। একই সঙ্গে মাড়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আরও দু’টি প্রকল্প জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে উপস্থাপন করেছে। এই তিনটি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন স্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘এই সাফল্যে আমি খুশি।’’ অন্য দিকে, মাড়গ্রাম ১+২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আয়েশা সুলতানা বলেন, ‘‘প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তরে এই প্রথম জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী প্রকল্প উপস্থাপন করল।
তোড়া দাস ও তার সহযোগী অনন্যা প্রামাণিক এলাকার ৫২টি পুকুরের জল পর্যবেক্ষণ করে পুকুরের জল দূষণ এবং কোন পুকুরের জলে উপকারিতা বেশি এ নিয়ে প্রকল্প উপস্থাপন করেছে। তার মধ্যে তোড়া দাস দেশের সর্বকনিষ্ঠ ‘খুদে বিজ্ঞানী’ মনোনিত হয়েছে। জেলা ও রাজ্য স্তরেও এই প্রকল্পটি সুনাম কুড়িয়েছে। এর জন্য আমরা গর্বিত।’’ মাড়গ্রাম ১+২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরেশনাথ রজক বলেন, ‘‘স্কুলের ছাত্রী ও শিক্ষিকার পরিশ্রমকে কুর্ণিশ জানাই।’’ অন্য দিকে, মাড়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনসুর আলম বলেন, ‘‘এই সাফল্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’’ জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের জেলা আহ্বায়ক তারক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আশা করব এই প্রকল্প বিদেশে প্রতিযোগিতা মূলক বিজ্ঞান কংগ্রেসে জায়গা করে নিতে পারবে।’’ জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘এই সাফল্য শুধু মাড়গ্রামের নয়, বীরভূম তথা রাজ্যবাসীর সাফল্য। ওদের সংবর্ধনা দেব।’’