নজরে: রবিবার ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঝালদার তুলিনের সুবর্ণরেখা সেতুতে পাহারা। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরুলিয়া আসার খবরে রবিবার সকাল থেকেই পুলিশ প্রশাসনের অন্দরে ব্যস্ততা ছিল চরমে। তবে তিনি সড়কপথে আসবেন, নাকি আকাশপথে, তা জানা ছিল না ঝালদা মহকুমা পুলিশের। তাই ঝালদা শহরের সত্যভামা বিদ্যাপীঠ ময়দানে হেলিপ্যাড তৈরি করেছিল প্রশাসন। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল ঝালদা থেকে পুরুলিয়া শহরে যাওয়ার সব রাস্তা। সারাদিন ধরে চলে পুলিশের কড়া নজরদারি। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়া আসবেন বিকেল ৫টা নাগাদ। বেলা পৌনে ৪টে নাগাদ খবর আসে, মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নেমেছে পুরুলিয়া শহরে। তারপরেই স্বস্তি আসে মহকুমা পুলিশ প্রশাসনে।
সকাল ১০টা। অন্য দিনের তুলনায় এ দিন ঝালদা শহরে ভিড় ছিল একটু বেশি। গোটা শহর ছিল কার্যত পুলিশের দখলে। টোটোতে কয়েকজন যাত্রী চাপিয়ে শহরের মূল রাস্তায় উঠতেই পুলিশের ধমক শুনলেন চালক। কারণ জানতে চাওয়ায় তিনি শুনলেন, ওই রাস্তা দিয়েই যেতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। তারপর টোটো ঘুরিয়ে অন্য পথ ধরলেন তিনি।
শহরে যান চলাচলে এ দিন নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। শহরের বিভিন্ন মোড়ে ছিলেন পুলিশের পদস্থ আধিকারিকে। অন্য দিনের তুলনায় এ দিন তাঁদের তৎপরতা ছিল অনেক বেশি। শনিবার রাত থেকেই ঝালদার বিভিন্ন জায়গায় নাকা-তল্লাশি চালায় পুলিশ। ঝালদার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের সংযোগকারী সুবর্ণরেখা নদীর কাছে পুলিশের নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। পুলিশ সূত্রে খবর, ঝালদা লাগোয়া জঙ্গল এলাকায় অভিযান চালায় বিশেষ বাহিনী।
শহরের মূল রাস্তায় নজরদারির জন্য নামানো হয়েছিল পুলিশের টহলদারি ভ্যান। এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঝালদা এবং লাগোয়া এলাকায় নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন পুলিশের বেশ কয়েকজন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিশদে কিছু বলতে চায়নি পুলিশ। পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক সব ধরণের ব্যবস্থা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। জঙ্গল এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানো হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তা আঁটসাঁট করার জন্য ভিন জেলা থেকেই ঝালদায় পুলিশকর্মী আনা হয়েছিল। ঝালদা ছাড়াও লাগোয়া কোটশিলা, বাঘমুণ্ডি, জয়পুর কিংবা চাষমোড়ের মতো এলাকাগুলিতেও এ দিন চোখে পড়েছে পুলিশের বিশেষ নজরদারি।
সত্যভামা বিদ্যাপীঠ ময়দানে হেলিপ্যাড তৈরি হওয়ায় শহরের অনেক বাসিন্দাই মনে করেছিলেন ঝালদা হয়ে পুরুলিয়া শহরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ সূত্রের খবর, পরিচিত পুলিশকর্মীদের কাছে অনেকেই এ দিন ফোন করে জানতে চান, কখন মুখ্যমন্ত্রী ঝালদা আসবেন। ধন্দে ছিলেন পুলিশ আধিকারিকদের একাংশও ধন্দ কাটে বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ। যখন খবর আসে, পুরুলিয়া শহরে নেমেছে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার।