তছনছ: ঝালদার কর্মাডি গ্রাম এলাকার একটি খেতে। নিজস্ব চিত্র
হাতির হানা অব্যাহত পুরুলিয়ার ঝালদা এলাকায়।
গত শুক্রবার ঝালদায় বেশ কিছু হাতি ঢুকে পড়ে। সংখ্যায় তারা কত, সে ব্যাপারে বন দফতর স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি। সেই থেকে ঝালদা বনাঞ্চলের ইলু-জারগো পঞ্চায়েতের কর্মাডি এবং ঘসড়া গ্রামে হাতির উপদ্রব লেগে রয়েছে। রবিবার ঝাড়খণ্ড থেকে হাতির আরও একটি দল ঢুকে ওই পুরনো দলটির সঙ্গে মিশে যায়। হাতিদের উপদ্রবে এখন চাষিদের প্রায় দিশাহারা অবস্থা।
সোমবার রাতেও কর্মাডি এবং ঘসড়া গ্রামে হাতির তাণ্ডবে প্রায় আড়াই হেক্টর জমির আমন ধান তছনছ হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রের দাবি। মঙ্গলবার কর্মাডি গ্রামের বাসিন্দা তথা ইলু-জারগো পঞ্চায়েতের প্রধান প্রকাশ মাহাতো বলেন, ‘‘এর পরে হাতির হানা ঠেকাতে না পারলে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সঙ্গে নিয়ে বন দফতরের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেব।’’
বন দফতরের দাবি, কর্মাডি এলাকায় থাকা দলটিকে সোমবার সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ডের পথ ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সীমানার কাছাকাছি গিয়েও আবার তারা ফেরত চলে এসেছে। বন দফতরের এক কর্মীর দাবি, ঝাড়খণ্ড সীমানায় হুলা পার্টির লোকজন মশাল জ্বালিয়ে থাকায় ভয়ে দলটি ও দিকে পা রাখতেই চাইছে না। ঝালদা বনাঞ্চলের অধিকারিক অমিয়বিকাশ পাল বলেন, ‘‘আমরা হাত গুটিয়ে বসে নেই। আমাদের কর্মীরা হাতিগুলিকে ঝাড়খণ্ডের পথ ধরাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’ ঝালদা বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই কর্মীরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে হাতির দলটিকে ঝাড়খণ্ডের পথ ধরানোর চেষ্টা শুরু করেছেন।
ঝালদা এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ঘসড়া গ্রামের চাষি দ্বারিকনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘খেতে যা ছিল, সব প্রায় শেষ। বন দফতর না পারছে হাতি তাড়াতে, না মিলছে ক্ষতিপূরণ।’’ ডিএফও (পুরুলিয়া) রামপ্রসাদ বাদানা বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ঝালদা এলাকা থেকে দলটিকে তাড়ানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আশা করি, খুব শীঘ্রই হাতিগুলিকে ঝাড়খণ্ডে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে।’’
অন্য দিকে, অযোধ্যা বনাঞ্চলে থাকা ১৩টি হাতি বর্তমানে আড়শার ভুদা ও অযোধ্যার সিলিংদার জঙ্গলে রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই দলের তিনটি হাতি সোমবার রাতে বেরিয়ে আড়শা বনাঞ্চলের ভুদা গ্রামে ঢুকেছিল বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই হাতিগুলি প্রায় এক হেক্টর জমির আমন ধান তছনছ করেছে বলে খবর।
অযোধ্যার ওই দলে দু’টি শাবক থাকায় হাতিগুলি সে ভাবে ক্ষয়ক্ষতি চালাচ্ছে না বলে দাবি করেছে বন দফতর।