দুর্মূল্য: পুরুলিয়া শহরের সুফল বাংলা স্টলে। ছবি: সুজিত মাহাতো
রেশন দোকানে এবং সুফল বাংলার স্টলগুলিতে সোমবার থেকেই ৫৯ টাকা প্রতি কিলো দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু পুরুলিয়ায় একটি রেশন দোকানেও স্বল্প মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়নি। জেলার তিনটি ‘সুফল বাংলা’ স্টলে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হলেও সেখানে দাম কেজি প্রতি ৯০ টাকা, যা সরকারি নির্ধারিত দামের থেকে ৩১টাকা বেশি।
কেন সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রেশন দোকানে স্বল্পমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হল না?
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করার জন্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি। নির্দেশ এলে ব্যবস্থা করা হবে।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রেশনে ৫৯টাকা কেজি দামে পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি।”
কিন্তু কেন সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ‘সুফল বাংলা’র স্টলগুলিতে, সে প্রসঙ্গে জেলাশাসকের মন্তব্য, ‘‘খতিয়ে দেখতে হবে।’’
ইতিমধ্যেই জেলার খুচরো বাজারে কেজি প্রতি দরে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে পেঁয়াজের দাম। সোমবার জেলার বিভিন্ন বাজারে গড় দাম ছিল ১২০-১৪০ টাকা প্রতি কেজি। এ দিন থেকে রাজ্যের বেশ কিছু রেশন দোকানে ৫৯টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হবে বলে ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। অভিযোগ, পুরুলিয়াতে সেই উদ্যোগ শুরু হয়নি।
রেশন ডিলারদের দুই সংগঠনের দুই নেতা নিরঞ্জন মাহাতো ও প্রভাশিস সিংহদেও জানান, রেশন দোকানে স্বল্পমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করার বিষয়টি তাঁরা সংবাদমাধ্যমে দেখেছেন। কিন্তু তাঁদের কাছেও এই মর্মে কোনও নির্দেশ আসেনি।
জেলাসদর পুরুলিয়া, ঝালদা ও কোটশিলার ‘সুফল বাংলা’ স্টলে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা কেজি দামে। যদিও বাঁকুড়ায় ওই স্টলগুলি থেকে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই। শুভাশিস মল্লিক, নিরুপম চক্রবর্তী, আনোয়ার হোসেন, রেখা দাসদের মতো ক্রেতাদের আক্ষেপ, ‘‘অন্য জেলায় ৫৯ টাকা কেজি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। আমরা কিনছি ৯০ টাকায়।’’ তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘পাশাপাশি দুই জেলায় দামে এত বৈষম্য কেন।’’
‘সুফল বাংলা’ স্টলগুলির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঝালদার ‘লার্জ সাইজ এগ্রিকালচারাল প্রাইমারি কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে’র ম্যানেজার অনিল কুইরির দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার ৫৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ সরবরাহ করছে না। তাই ওই দামে পেঁয়াজ বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা পুরুলিয়া ও ঝালদার পাইকারি বাজার থেকে ৯০ টাকা কেজি দামে পেঁয়াজ কিনছি। সেই দামেই বিক্রি করছি। এক টাকাও লাভ রাখছি না।”
অনিলবাবুর দাবি, দিন পনেরো আগে জেলা ‘কো-অপারেটিভ হোলসেল কনজজ়িউমারস সোসাইটি’ তাঁদের কম মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়টি জানিয়েছিল। ‘সুফল বাংলা’র স্টলগুলিতে কত পরিমাণ পেঁয়াজ বিক্রি তাঁদের পক্ষে সম্ভব, সেটা জানতে চেয়েছিল। অনিলবাবু বলেন, ‘‘আমরা ২০ টন পেঁয়াজ চেয়েছিলাম। কিন্তু পাইনি।”