দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
দিনমজুর বৃদ্ধকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মারল ‘রেসিডেন্ট’ দাঁতাল। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ পুরুলিয়ার ঝালদা বনাঞ্চলের কুটিডি গ্রামের অদূরে। মৃতের নাম ফণী মুড়া (৬১)। স্থানীয় এবং বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝালদার মসিনা গ্রামের ওই বৃদ্ধ ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন। বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে সেই ভাটা। অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে তিনি মাটি ভেজাচ্ছিলেন। সেই সময়ে হঠাৎ দাঁতালটি একেবারে কাছাকাছি চলে আসে। বাকিরা পালিয়ে গেলেও তিনি পারেননি। শুঁড়ে পেঁচিয়ে সেখানেই তাঁকে আছড়ে মারে হাতি। তার পরে সেঁধিয়ে যায় কাছের জঙ্গলে। খবর পেয়ে ঝালদা রেঞ্জের বনকর্মী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ঝালদা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত বৃদ্ধের দেহ পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঝালদা রেঞ্জের আধিকারিক অমিয়বিকাশ পাল জানিয়েছেন, হাতিটি ‘রেসিডেন্ট’। বেশির ভাগ সময়ে খামারের জঙ্গলেই থাকে। কিছু দিন আগে জায়গা বদল করে কলমার জঙ্গলে গিয়েছিল। ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটাল। সরকারি নিয়ম মতো মৃতের পরিবার যাতে ক্ষতিপূরণের টাকা পায়, সে জন্য সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই বন আধিকারিক।
ফণীবাবুর বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও ছেলে ও মেয়ে রয়েছেন। রয়েছে ছেলের পরিবার। তাঁরা জানান, সম্প্রতি ইটভাটায় কাজ শুরু করেছিলেন বৃদ্ধ। ছেলে দিন মজুরি করেন। মৃতের স্ত্রী টুনুবালা বলেন, ‘‘কত করে মানা করেছিলাম, কী সব অসুখ এসেছে। কাজে যাওয়ার দরকার নেই। ঘরে যা আছে সেটা দিয়েই কয়েক দিন চালিয়ে দেব। কিছুতেই আমার কথা কানে তুলল না।’’
অন্য দিকে, গত শনিবার ভোরে যে দু’টি হাতি ঝাড়খণ্ড থেকে ঝালদা বনাঞ্চলে ঢুকেছিল, সেগুলিকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের পথ ধরাতে পারেনি বন দফতর। হাতি দু’টি এখনও হেঁসলার জঙ্গলেই রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।