সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল।
সরকারি হাসপাতালের মধ্যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। এক রোগীর আত্মীয়ের মারধরে জ্ঞান হারালেন কর্তব্যরত নার্স। সোমবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপানউতর বীরভূমের সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ওই ঘটনায় কৈলাস দলুই নামে এক অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, আহত নার্স এখনও ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁকে। কেন তাঁর উপর আক্রমণ হল, সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে মৌমিতা কর্মকার নামে এক নার্স সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে নিজের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। সেই সময় কৈলাস নামে ওই ব্যক্তি আচমকা তাঁকে আক্রমণ করেন। ইঞ্জেকশন ডিসপোজালের লিফটার দিয়ে নার্সকে তিনি মারধর করেন বলে অভিযোগ। মারের চোটে ওই নার্স সংজ্ঞা হারান। শুরু হয় হইচই। সোমবার আক্রান্ত ওই নার্স বলেন, ‘‘আমরা দু’জন স্টাফ ছিলাম দায়িত্বে। আচমকা এক জন এসে আমাদের ইঞ্জেকশন ট্রলির দিকে এগিয়ে যান। আমি জিজ্ঞেস করি, উনি কিছু খুঁজছেন কি না। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম হাউস কিপিংয়ের কেউ হবেন। কিন্তু তিনি কোনও কথা বলেননি। তার পর হঠাৎই ইঞ্জেকশনের লিফটার তুলে আমার দিকে চড়াও হলেন উনি। বললেন, ‘আমি তোকে মারতে এসেছি!’ কিন্তু আমি ওঁকে চিনিই না। আমার কানে, গলায় এবং পেটে জোরে আঘাত করেন উনি। তার পর আর কিছু মনে নেই।’’ এমন হামলার ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মৌমিতা বলেন, ‘‘পরে জানতে পারি ওই লোকটির এক আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম হামলার পর। চিকিৎসাধীন ছিলাম। পুরো ঘটনার কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ওই নার্সের সংযোজন, ‘‘আমাদের একটু নিরাপত্তা হলে ভাল হয়। বাড়ি থেকে এত দূরে থাকি শুধু রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য। তাঁদের কাছ থেকেও আমরা একটু ভাল ব্যবহার আশা করি।’’
অন্য দিকে, অভিযুক্তের পরিবারের দাবি, ওই ব্যক্তির মানসিক সমস্যা রয়েছে। তাই তিনি এমন কাজ করেছেন। ওই ঘটনার বিচার চেয়ে পাশাপাশি এরকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য হাসপাতাল সুপারের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন সমস্ত নার্স।