Durga Puja 2023

অনুদানের ‘মোহে’ কি বাড়ছে বারোয়ারি পুজো

প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, যে পুজোগুলি হচ্ছিল, সেগুলিই হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু পুজো বেড়েছে জেলায়।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

  সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫৮
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত পুজোর সংখ্যা এ বারও বাড়ছে বীরভূম জেলায়। এই সংখ্যাবৃদ্ধির প্রকৃত কারণ প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট করা না হলেও, ঘনিষ্ঠ মহলে অনেক পুলিশ আধিকারিককেই বলতে শোনা গিয়েছে, সরকারি অনুদানের ‘মোহেই’ বাড়ছে পুজোর সংখ্যা। জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, গত বছরের তুলনায় এ বার জেলায় সর্বজনীন পুজো বেড়েছে
কম-বেশি একশোটি।

Advertisement

পুলিশের তথ্য বলছে, গত বছর জেলায় প্রশাসনের অনুমোদন পাওয়া ২৫৬০টি বারোয়ারি পুজো সরকারের থেকে ৬০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাওয়া তালিকা বলছে, এ বার সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত পুজোর সংখ্যা ২৬২৮। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটা আরও ১৫-২০ বাড়বে। আমরা আবেদনগুলি খতিয়ে দেখছি।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ এবং পুজো উদ্যোক্তারা মানছেন, পুজোর সংখ্যা বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে ৭০ হাজার টাকা অনুদানের ‘হাতছানি’।

জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে জেলা পুলিশের আওতায় সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা ছিল ২০৬৫। কোভিড-পরিস্থিতিতে সেই সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হয়েছিল ২৪৫০। এ বার সংখ্যা ২৬০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। পুজো কমিটিগুলিকে বৃহস্পতিবার থেকেই সরকারি অনুদানের চেক দেওয়া শুরু করছে পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে খবর, গোটা জেলায় পারিবারিক ও বারোয়ারি মিলিয়ে মোট পুজোর সংখ্যা কম-বেশি ৩৬০০। সেখানে প্রতি ব্লকেই গড়ে চার-পাঁচটি করে বারোয়ারি পুজো বেড়েছে ফি বছর।

Advertisement

প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, যে পুজোগুলি হচ্ছিল, সেগুলিই হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু পুজো বেড়েছে জেলায়। তবে আড়ালে তাঁদের অনেকেই মানছেন, প্রত্যেক ব্লকেই নতুন কয়েকটি করে কয়েকটি পুজো প্রত্যেক বছরই স্থানীয় থানার মাধ্যমে সরকারি অনুদান পাচ্ছে। একদা পারিবারিক পুজো এখন ‘বারোয়ারি’ পুজোর শর্তপূরণ করে সরকারি অনুদানের জন্য আবেদন করছে। কিছু ক্ষেত্রে নতুন পুজোও তালিকায় যুক্ত হচ্ছে।

পুজোর অনুমতি মূলত সাধারণ প্রশাসন দিলেও অনুদানের বিষয়টি বিবেচনা করে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আগে যে পুজোগুলি অনুদান পেয়েছে, সেগুলির বাইরে যারা নির্দিষ্ট শর্তপূরণ করে অবেদন করেছে, তাদের আর্জি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এটা ঠিক, অনেক ক্ষেত্রেই উনিশটা বিশ করতে হয়েছে।’’

প্রশাসন অবশ্য বিষয়টিকে ইতিবাচক বলেই মনে করছে। তাদের ব্যাখ্যা— বেশ কিছু পারিবারিক পুজো বারোয়ারি পুজোর শর্ত পূরণ করে সরকারি অনুদান পাচ্ছে। এই পুজোগুলির সঙ্গে এলাকার মানুষের যোগ অত্যন্ত নিবিড়। কিন্তু টাকার অভাবে এতদিন সেগুলি জৌলুস হারিয়েছিল। সরকারি অনুদান পেয়ে পুজোগুলি পুরনো রূপ-গন্ধ ফিরে পাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বীরভূমের ৩৬টি দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক ক্ষেত্রেই অবশ্য মণ্ডপ নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, ‘‘সাধারণত অধিকাংশ পুজোমণ্ডপের কাজ শেষ হতে চতুর্থী বা পঞ্চমী হয়ে যায়। গত সপ্তাহে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে। মু্খ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন জেনে যতটা সম্ভব দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement