নিজের বছর উনিশের মেয়ের সঙ্গেই স্নাতকস্তরের পরীক্ষা দিলেন পুরুলিয়ার দুলু মহান্তি। নিজস্ব ছবি।
শেখার কোনও বয়স হয় না। সেই কথাই আবার প্রমাণ করলেন চল্লিশ ছুঁই ছুঁই মা। নিজের বছর উনিশের মেয়ের সঙ্গেই স্নাতকস্তরের পরীক্ষা দিলেন পুরুলিয়ার দুলু মহান্তি।
দুলু পুরুলিয়ার বলরামপুর কলেজে পড়েন। এ বছর স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছেন বরাবাজার কলেজ থেকে। ওই কলেজেই শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন তাঁর মেয়ে ইন্দ্রাণী পতি। ইন্দ্রাণী অবশ্য পরীক্ষা দিচ্ছেন মানবাজার কলেজে। মেয়ে জানান, এখন একসঙ্গেই পড়াশোনা করেন দু’জনে। একে অপরকে সাহায্য করেন। ইন্দ্রাণীর কথায়, ‘‘মা আমার বন্ধুর মতো। রান্নাবান্না থেকে পড়াশোনা, যা করি দু’জনে একসঙ্গেই করি। পরীক্ষার প্রস্তুতিও একসঙ্গেই নিয়েছি।’’
দুলু বলরামপুর থানার পতিডি গ্রামের বাসিন্দা। সালটা ১৯৯৯। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পতিডি গ্রামের বাসিন্দা দয়াময় পতির সঙ্গে বিয়ে টুলুর। বিয়ের পর লেখাপড়ায় সাময়িক ভাবে ছেদ পড়লেও দুলু জানান, শ্বশুরবাড়ির সকলের, বিশেষত শাশুড়ির উৎসাহ পেয়েই তিনি আবার লেখাপড়া শুরু করেছেন। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৮ সালে মুক্ত বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন দুলু। তার পর কলেজ। দুলু বলেন, ‘‘বিয়ের পরেও পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছি। আমি সত্যিই ভাগ্যবতী। বাড়ির সকলেই আমায় খুব সাহায্য করেছেন। তাই এত দূর পৌঁছতে পেরেছি।’’
মায়ের সঙ্গে একই কলেজে পড়ার ইচ্ছা ছিল ইন্দ্রাণীর। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। মেয়ে বলেন, ‘‘আমার নেহাতই শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ছিল। না হলে আমরা দু’জনেই একই কলেজে ভর্তি হতাম।’’