Tripura Assembly Election 2023

ত্রিপুরায় ভোট আর আসন দুই-ই কমল বিজেপির! ভোট ভাগাভাগিতেই কি কান ঘেঁষে রাজত্ব রক্ষা?

২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোটের। বাঙালি অধ্যুষিত অনেক আসনেই তিপ্রা ভোট কাটায় বাম-কংগ্রেস জোট হেরেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ১৯:০৯
Share:

বাম-কংগ্রেস জোট হওয়ায় বাঙালি অধ্যুষিত ৪০টি আসনেও চাপে ছিল বিজেপি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা দাবি করেছিলেন, ত্রিপুরায় বিরোধীশূন্য বিধানসভা হবে। গণনার ফল বলছে, শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় জয় এলেও, প্রত্যাশা পূরণ হল না বিজেপির। ত্রিমুখী লড়াইয়ে কোনওমতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে পদ্ম-জোট। কিন্তু আসন গত বারের তুলনায় কমেছে। দল এবং জোট, কমেছে দুইয়েরই ভোট। মুখ্যমন্ত্রী মানিক হাজারের একটু বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। হেরে গিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা, রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের মতো প্রথম সারির নেতারা।

Advertisement

৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপি এ বার ৫৫টিতে লড়ে ৩২টি আসনে জিতল। সহযোগী আইপিএফটি ৬টি লড়ে মাত্র ১টিতে। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ ভোট। সঙ্গী আইপিএফটি এ বার ভোট পেল মাত্র ১.২ শতাংশ। ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে বিজেপি জোটের।

Advertisement

২০১৮ সালের সেই বিধানসভা ভোটে ত্রিপুরার ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৫১টি লড়ে ৩৬টিতে জিতেছিল বিজেপি। পেয়েছিল প্রায় ৪৪ শতাংশ ভোট। তাদের সহযোগী জনজাতি দল আইপিএফটি ৯টিতে প্রার্থী দিয়ে ৮টিতেই জেতে। ভোট পেয়েছিল প্রায় ৭.৪ শতাংশ। আড়াই দশক শাসন চালানোর পরে মাত্র ১৬টি বিধানসভা আসনে জয় পায় বামেরা। গত জুনের উপনির্বাচনে হাতছাড়া হয় তারও একটি আসন। অন্য দিকে, ওই উপনির্বাচনে আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রটি বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন।

গত দেড় বছরের বিজেপির চার জন বিধায়ক দল ছেড়েছিলেন। আইপিএফটির অধিকাংশ বিধায়কই যোগ দিয়েছিলেন রাজপরিবারের বংশধর প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য দেববর্মনের গড়া নয়া জনজাতি দল তিপ্রা মথায়। ২০২১ সালের এপ্রিলে ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিল (এডিসি) নির্বাচনে বিজেপি-আইপিএফটি জোটকে ধরাশায়ী করে জয়ী হয়েছিল তিপ্রা মথা। ত্রিপুরা বিধানসভার এক-তৃতীয়াংশ (মোট ২০টি) বিধানসভা আসন রয়েছে এডিসি এলাকায়। পরিস্থিতি বুঝে সেখানে এ বার সহযোগী আইপিএফটি-কে মাত্র ৬টি আসন ছেড়েছিল তারা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বাম-কংগ্রেস জোট হওয়ায় বাঙালি অধ্যুষিত ৪০টি আসনেও চাপে ছিল বিজেপি। কিন্তু ফল বলছে, শেষ পর্যন্ত বাঙালি ভোটারদের ‘সৌজন্যে’ই ক্ষমতায় ফিরেছে তারা। এ ক্ষেত্রে তিপ্রার ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাম-কংগ্রেস জোট। জনজাতি এলাকার ২০টি আসনের পাশাপাশি বাঙালি অধ্যুষিত ২২টি কেন্দ্রেও এ বার ভোটে লড়ছিল প্রদ্যোতের দল। সেখানেও নজর কাড়া ভোট পেয়েছে তারা। ত্রিপুরায় ভোটের প্রচারে অংশ নেওয়া এআইসিসি সম্পাদক রণজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফলাফলের প্রাথমিক বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে, এডিসি এলাকার বাইরে কিছু আসনে বিজেপি বিরোধী ভোটে ভাগ বসিয়েছে তিপ্রা।’’ পরিসংখ্যান বলছে, সিপিএমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের ধনপুরের মতো বিজেপির ঝুলিতে যাওয়া বেশ কিছু কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোট এবং তিপ্রার প্রাপ্ত ভোটের যোগফল পদ্মের চেয়ে বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement