জাপানের মিয়াজ়াকি আম পাওয়া গেল বীরভূমে! —প্রতীকী চিত্র।
এক কেজি আমের দাম আড়াই লক্ষ টাকা। ওজন করে একটি আম বিক্রি হল ১০ হাজার ৬০০ টাকায়। কিনলেন জনৈক মির্জা ইজাজ বেগ ওরফে পপিন। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি প্রজাতির আমের মধ্যে অন্যতম জাপানের মিয়াজ়াকি। সেই আমই ফলেছে বীরভূমের একটি মসজিদ লাগোয়া জায়গায়। সেই আমই নিলামে আড়াই লক্ষ টাকা কেজি দরে কিনে কাপড় ব্যবসায়ী পপিন জানান, আমটি খাবার পর তিনি আঁটি পুঁতবেন মাটিতে। বাড়ির বাগানে জাপানি এই আমগাছ দেখতে পাওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
বীরভূমের দুবরাজপুর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি মসজিদ লাগোয়া জমিতে রয়েছে মিয়াজ়াকি আমগাছ। আম দেখে মসজিদ কমিটি বুঝতে পারেন দামি প্রজাতির আমগাছ এটি। তার পরেই শুরু হয় শোরগোল। গাছে আম ধরেছে মোট ৮টি। তবে মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, এর নিলাম ডাকা হবে। শুক্রবার নিলামে ১০ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে একটি আম কেনেন পপিন। দুবরাজপুরের বাসিন্দা পপিন জানান, মসজিদ কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সাহায্য করার লক্ষ্যেই তিনি নিলামে ১০ হাজার ৬০০ টাকায় আমটি কিনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে এক লক্ষ টাকা কেজি দরে এই আম বিক্রি হয়। আগে খাব। তবে এখান থেকে নতুন একটা আমগাছ চাই।’’
শুক্রবার নিলামে ১০ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে একটি আম কেনেন জনৈক মির্জা ইজাজ। —নিজস্ব চিত্র।
বছর তিনেক আগে শেখ নিজামুদ্দিন ওরফে সোনা নামে ওই এলাকারই এক যুবক বিদেশে বেড়াতে গিয়ে এই আমগাছটির চারা কিনে এনে লাগিয়েছিলেন মসজিদের পাশে। কিছু দিন আগে তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর দাদা সেখ মোতায়ার হোসেন ওরফে বাবলু বলেন, ‘‘ভাইয়ের গাছের নেশা ছিল। এখান-ওখান থেকে বিভিন্ন চারা এনে লাগাত। কিছু দিন আগে ও ক্যানসারে মারা যায়। আর এই গাছটি বড় হওয়ার বুঝতে পারলাম, এটা উন্নত প্রজাতির। আমের রংটাই অন্য রকম।’’
মন্দির কমিটি জানাচ্ছে, গাছে ফল ধরার পর এ সম্বন্ধে তারা খোঁজ শুরু করে। তার পর জানতে পারে, এটি মিয়াজ়াকি আমগাছ। এই আম দেখতে আসা সিউড়ির এক চারাগাছ বিক্রেতা সাগর মালের কথায়, ‘‘মূলত জাপানি প্রজাতির এই আমগাছ ভারতের জলবায়ুতে বড় হলেও তাতে ফল সচরাচর হয় না। বাংলাদেশের দু’একটি জায়গায় এই আমগাছ রয়েছে বলে শুনেছি। এই আমের বৈশিষ্ট্য হল এর স্বাদ। খেতে ভীষণ মিষ্টি এই আমটির আঁটি খুব ছোট হয়। আর এই আম সহজলভ্য না হওয়ার কারণে পৃথিবীর দামি আমগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। প্রায় ২ লক্ষ টাকার কেজি দরে ভারতের বিভিন্ন বাজারে মেলে এই আম।’’