গ্রামের মেয়ের দেহ আসার পরে জনতার ঢল। মুরারইয়ের গ্রামে রবিবার। নিজস্ব চিত্র
শান্ত, হাসি-খুশি স্বভাবের মেয়ের এমন পরিণতি মানতে পারছে না মুরারইয়ের গ্রাম। রবিবার বিকেলে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর দেহ গ্রামে পৌঁছতে ছাত্রীর বাড়ির সামনে ভেঙে পড়ে গোটা গ্রাম। শোক আর ক্ষোভে তখনও ফুটছে সেই জমায়েত। পরিবার সূত্রের খবর, ছাত্রীর বাবা দিনমজুরের কাজ করে কোনও রকম সংসার চালান। অভাব এতই যে গ্রামবাসী এ দিন চাঁদা তুলে সৎকারের ব্যবস্থা করেন। এমন অভাবের মধ্যেও নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল ওই ছাত্রী।
টিউশন থেকে ফেরার পথে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনা জানাজানি হয় রবিবার সকালে। তার কিছু পরেই আসে ছাত্রীর মৃত্যুর খবর। তখনই এলাকাবাসীর একাংশ চড়াও হন অভিযুক্ত উৎপল মণ্ডলের বাড়িতে। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ছাত্রীর বাড়ি থেকে দুশো মিটার দূরেই অভিযুক্তের বাড়ি। স্থানীয়েরা জানালেন, অভিযুক্ত যুবক এর আগেও মেয়েদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। কিন্তু, কোনও ক্ষেত্রেই পুলিশে অভিযোগ হয়নি। নিষ্পত্তি হয়েছে স্থানীয় স্তরেই।
কেন এ ভাবে আগের অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছেন, সেই আক্ষেপ যাচ্ছে না ছাত্রীর পরিজনদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, নবম শ্রেণির এই ছাত্রীকেও অতীতে উত্ত্যক্ত করেছে উৎপল। কিন্তু, অভাব আর লোকলজ্জার ভয়ে আর পুলিশে অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেছেন।
ছাত্রীর মা জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৬টার পরে অন্য দিনের মতো উৎপলের বাড়ির সামনে দিয়ে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল মেয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য দিনের তুলনায় রাত করে বাড়ি ফিরেছিল। কিন্তু, এমন কিছু যে ওর সঙ্গে হয়েছে বুঝতেও পারিনি। খানিক পরে গোঙানির আওয়াজ পেয়ে ঘরে গিয়ে দেখি ছটফট করছে মেয়ে।’’ সোমবার ছাত্রীর মৃত্যুর সংবাদ গ্রামে পৌঁছতে নামে শোকের ছায়া। বাড়ির সামনে ভিড় করেন গ্রামবাসী। ময়না-তদন্তের পরে বিকেলের দিকে দেহ পৌঁছয় বাড়িতে।