ধৃত: দুবরাজপুর আদালত চত্বরে খুনে অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র
হেতমপুরে তরুণী খুনে অভিযুক্ত যুবক মিলন বাদ্যকরকে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেল দুবরাজপুর থানার পুলিশ। দুবরাজপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার অভিযুক্তকে আদালতে তুলে সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। খুনের তদন্তের স্বার্থে বিচারক পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। এ দিন আদালতে তোলার সময় নিরুত্তাপ দেখিয়েছে ওই যুবককে।
সোমবার ভোরে দুবরাজপুরের হেতমপুর ঠাকুরপাড়ায় মিলনের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে মিতা দাস (১৮) নামে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা এলাকার গৌরবাজার তাঁতিপাড়ায়। মিলন নিজেও লাউদোহার বাসিন্দা। রবিবার বিকেলে মিতাকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নিয়ে এসে মিলন তার আত্মীয়ের বাড়িতে তুলেছিল। সোমবার ভোরে ওই বাড়ি থেকেই মিতার দেহ মেলে। মিলন পালিয়ে যায়। সোমবার সকালেই ফরিদপুর (লাউদোহা) থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে মিলন দাবি করে, সে তার ‘স্ত্রী’-কে খুন করেছে। ওই থানা থেকে মিলনকে নিয়ে আসে দুবরাজপুরের পুলিশ। মিতার বাবা নিমাই দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে মিলনকে গ্রেফতার করে এ দিন পুলিশ দুবরাজপুর আদালতে তোলে।
মিলনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে, বেশ কিছু জায়গায় খটকা থাকায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও অভিযুক্ত যুবককে ভাল করে জেরা করার উপরেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। কারণ, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশে জেনেছে, মিতার বিয়ে ঠিক হয়েছে জেনে রবিবার দু’জনে বাড়ি থেকে পালিয়ে মন্দিরে বিয়ে করে মিলনের আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিল। তার পরেও কেন মিলন তার ‘প্রেমিকা’ বা ‘স্ত্রী’-কে খুন করল, করলে কী ভাবে করল, সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রাথমিক ভাবে শ্বাসরোধের জন্য তরুণীর মৃত্যু হয়েছে ধরে নিলেও তরুণীর গলায় তেমন ক্ষতচিহ্ন পুলিশ পায়নি। গলার ডান দিকে আঘাতের সামান্য চিহ্ন থাকলেও সেটা ততটা প্রকট নয়। ওড়না ব্যবহার হয়েছিল কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত জানা যাবে না। তবে, ধৃত যুবকের য়ে তিন আত্মীয়কে সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মিতার বাবা এ দিন বলেন, ‘‘কী ভাবে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, সেটা দেখুক পুলিশ। কিন্তু আমার মেয়েকে যে মারল, তার কঠোর শাস্তি চাই।’’