মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে পিছিয়ে পিছিয়ে থাকা জেলার তালিকায় বীরভূম নেই। তবে গত ২ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তা এবং নবান্নের নির্দেশের পর বীরভূম জেলায় এই নিরিখে পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েতগুলির দিকে নজর দিয়েছে প্রশাসন।
দিন কয়েক আগে নলহাটি ১ ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত, বড়লা এবং বাউটিয়া পরিদর্শন করেছেন জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক (ডিপিআরডিও)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দফতরের কর্মী আধিকারিকেরা, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা এবং আইএসজিপি টিমের সদস্যরা। ছিলেন ওই পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও পঞ্চায়েত সচিব, নির্মাণ সহায়কেরা।
জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুচেতনা দাস বলেন, ‘‘পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের নিরিখে তো বটেই। স্মার্ট পঞ্চায়েত গড়ে উঠার পথে ও পঞ্চায়েতের অন্য কাজের নিরিখে পিছিয়ে ছিল ওই পঞ্চায়েতগুলি।’’ তিনি জানান, জেলায় এগিয়ে থাকা পঞ্চায়েতের সঙ্গে ওই পঞ্চায়েতগুলির তফাত কোথায়, কোথায় সমস্যা হচ্ছে, সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। তাঁর সংযোজন, ‘‘জেলায় এমন ১২-১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলিও পরিদর্শন করা হবে।’’
২ জানুয়ারি নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই তিনি বলেছিলেন, কোনও প্রকল্প ফেলে রাখা যাবে না। যে কাজগুলি চলছে, তা এই অর্থবর্ষেই শেষ করতে হবে। দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, পুরুলিয়া এবং দুই ২৪ পরগনার মতো জেলাগুলি এ কাজে পিছিয়ে ছিল। তার পরই পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে নির্মীয়মাণ প্রকল্প দ্রুত শেষ করার বিষয়ে প্রতিটি জেলায় নির্দেশ আসে নবান্ন থেকে। চলতি অর্থবর্ষের মধ্যেই তা করতে বলা হয়। বীরভূম জেলা অবশ্য তুলনায় ভাল জায়গায় রয়েছে। কিন্তু যেখানে যেটুকু সমস্যা রয়েছে সেটা পূরণ করে নিতে চায় প্রশাসন।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নলহাটি ব্লকের এই দুটি পঞ্চায়েত ক্রম অনুসারে বেশ কিছুটা নীচের দিকেই আছে।শুধু পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচেই নয়, পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় বাড়ানো, পঞ্চায়েতে নিয়ম মাফিক বৈঠক আয়োজন করা, সম্পত্তি কর আপলোড করা, বিভিন্ন শংসাপত্র অনলাইনে দেওয়া-সহ অন্য কাজ ও স্মার্ট পঞ্চায়েত গড়ে উঠার পথে আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। সেই জন্যই প্রতিটি খাত ধরে পর্যালোচনা করা হয়েছে ওই বৈঠকে।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে পিছিয়ে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বড়লা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সালমা বিবি। তিনি বলছেন, ‘‘ঠিকাদার সংস্থাগুলি নির্ধিরিত দলের থেকে অনেক কমে কাজ করতে রাজি হয়েছিল। কিন্ত কাজ শেষ করতে পারছিল না। তার উপরে পাথর শিল্পাঞ্চলে সমস্যার কারণে কালো পাথর এবং বালির দাম বেড়ে যাওয়ায় কাজ এগোয় নি।’’ তিনি জানান, যাতে দ্রুত কাজ হয় সে জন্য ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে নোটিশ করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ হবে। বাউটিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ জমিরউদ্দিন বলেন, ‘‘সমন্বয়ের অভাবে দরপত্র ডাকায় পিছিয়ে গিয়েছিলাম। সেটা সামলে দ্রুত দরপত্র ডেকে কাজ শুরু হবে।’’