সাদা, কালো গোলমরিচ মশলা হিসেবে ব্যবহার হয়। দু’টির মধ্যে তফাত কোথায়? ছবি: সংগৃহীত।
হালকা সিদ্ধ, নরম হলুদ ডিমের কুসুমের উপর একটু নুন আর গোলমরিচ ছড়িয়ে দিলেই স্বাদ হয়ে ওঠে অনবদ্য। শুধু পোচ বা অর্ধসিদ্ধ ডিম নয়, মাংস থেকে সাঁতলে নেওয়া সব্জি— নানা পদে নানা ভাবে গোলমরিচ খাওয়া হয়।
তবে ভারতীয় হেঁশেলে কালো মরিচের পাশাপাশি আকারে একটু ছোট, সাদা, মসৃণ গোলাকার আর এক মশলারও ব্যবহার হয়। কেউ একে বলেন সাদা মরিচ, কেউ আবার শাহ মরিচ।
রন্ধনপ্রণালী ভেদে রকমারি রান্নায় মরিচ দেওয়ার চল আছে। কিন্তু সাদা বা শাহ মরিচের সঙ্গে কালো গোল মরিচের তফাত কি শুধু রঙে? নামে মরিচ, তারা কি একই গাছে ফলে?
চেনা যায় ঝাঁঝে
কালো মরিচের পরিচয় তার ঝাঁজে। আকারেও সেটি কিঞ্চিৎ ভিন্ন বটে। গোল, তবে নিটোল নয়। উপরিভাগ অসমান। লঙ্কা না দিলেও, গোলমরিচের ঝাঁজে ঝাল দিব্যি উপভোগ্য হতে পারে।
শাহ মরিচের পরিচয় অবশ্য রূপে। গোলমরিচের চেয়ে সামান্য ছোট, গায়ের রংটি সাদা। রূপ-লাবণ্যে পৃথক। শাহ মরিচের তেলা গা। ঝাঁজ, গন্ধ দুটোই আছে, তবে কালো মরিচের মতো সে অতটাও ঝাঁঝালো নয়।
প্রক্রিয়াকরণেও রয়েছে ভিন্নতা
দুই ধরনের মরিচ একই গাছের ফসল। তবে প্রক্রিয়াকরণের তারতম্যে তার স্বাদ, বর্ণ বদলে যায়।
সবুজ মরিচ রোদে শুকিয়ে কালচে বর্ণ ধারণ করে। সূর্যের তাপে শুকোনোর সময় কুঁচকে যায় তার বাইরের ত্বক। এই পদ্ধতির কারণই হল, এতে মরিচের ঝাঁজ, স্বাদ দুই-ই খোলতাই হয়।
শাহ মরিচ হল গাছের পাকা ফসল। লালচে মরিচ জল ভিজিয়ে রাখলে নরম হয়ে যায় বাইরের ত্বক বা খোসা। খোসা ছাড়িয়ে মরিচ শুকিয়ে নিলেই সাদা বর্ণ ধারণ করে সেটি।
পুষ্টিগুণে তফাত হয় কোনও?
কালো গোলমরিচে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ছাড়াও রয়েছে ফাইবার। শাহ মরিচের পুষ্টিগুণ একই। রঙের বদল হলেও পুষ্টিতে বিশেষ পার্থক্য হয় না।
ব্যবহারবিধি
ডিমসেদ্ধ থেকে পোচ, পাস্তা, চাউমিন-সহ নানা খাবারে কালো মরিচ দেওয়ার চল রয়েছে। শাহ মরিচ ব্যবহার হয় নানা পদেই। তবে সাদা কাইয়ের রান্নায় এটি বিশেষ ভাবে দেওয়া হয়। যেমন চিকেন রেজ়ালা, স্যুপ, সাদা সস্ ইত্যাদি।
স্থায়িত্বের দিক থেকে কালো মরিচ এগিয়ে। সাদা মরিচ ঠিক ভাবে না রাখলে দ্রুত গন্ধ, স্বাদ কমে যায়। এটি বেশি দিন রাখাও যায় না।