Shantiniketan

বন্ধ রবীন্দ্র ভবন, ক্ষতি কোটির বেশি

শান্তিনিকেতনে পর্যটকের সংখ্যা অন্য বছরের তুলনায় এখনও কম। এর অন্যতম কারণ বিশ্বভারতীর দ্রষ্টব্য স্থানগুলি এখনও বন্ধ বলে অনেকের মত।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১০:২০
Share:

বন্ধ রবীন্দ্রভবন। সামনে পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

দেশ তথা রাজ্যে চলে এসেছে করোনার টিকা। স্বাভাবিকের পথে জনজীবন। রেল চলাচলও স্বাভাবিকের দিকে। রাজ্যের পর্যটন শিল্পও ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিচ্ছে। কিন্তু, শান্তিনিকেতনে পর্যটকের সংখ্যা অন্য বছরের তুলনায় এখনও কম। এর অন্যতম কারণ বিশ্বভারতীর দ্রষ্টব্য স্থানগুলি এখনও বন্ধ বলে অনেকের মত। রবীন্দ্রভবন সংগ্রহশালা বন্ধ থাকায় পর্যটকদের শান্তিনিকেতনের প্রতি আকর্ষণ কমেছে বলেও কারও মত। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার ফলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বিশ্বভারতীরও। যদিও, সংগ্রহশালা খোলার বিষয়ে কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পাওয়ার আগে পর্যন্ত এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর তরফ থেকে কোনও ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে না বলেই জানান এক আধিকারিক।
২০২০ সালের ৯ মার্চ করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় রবীন্দ্রভবন, শান্তিনিকেতন গৃহ, বাংলাদেশ ভবন সহ অন্য প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলিতে। এর মধ্যে রবীন্দ্রভবন বিশ্বভারতীর প্রধান দর্শনীয় স্থান। এখানে রবীন্দ্রনাথের পাঁচটি বাড়ি ছাড়াও বিচিত্রা বাড়ির দুটি তলায় রয়েছে সংগ্রহশালা। যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাপ্ত নোবেলের প্রতিকৃতি, পৃথিবীর নানা দেশ থেকে পাওয়া বিভিন্ন স্মারক এবং তাঁর অন্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র রাখা রয়েছে। রবীন্দ্রভবন সূত্রের খবর, সারাবছরই রবীন্দ্রভবনে বেশ বড় সংখ্যার পর্যটক এলেও দুর্গাপুজোর কিছু আগে থেকে বসন্ত উৎসবের পর পর্যন্ত পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই বেশি থাকে। এই সময়ে সোমবার থেকে শুক্রবার কম-বেশি দৈনিক গড়ে ২৫০০ থেকে ৩০০০ দর্শক আসেন। শনি এবং রবিবার এই সংখ্যাটি ছুঁয়ে যায় প্রায় ৫০০০।
বর্তমানে বিশ্বভারতী বন্ধ থাকার পরেও শান্তিনিকেতন সংলগ্ন বিভিন্ন স্থান বিশেষত খোয়াই হাটের টানে সপ্তাহান্তে ভিড় হচ্ছে ভালই। সেই বিষয়টাই ভাবাচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। আবার ঝুঁকিও রয়েছে। সংগ্রহশালা খোলার পরে যদি সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে বিশ্বভারতীর অন্য দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে। পর্যটকদের অনেকে যদিও এত দূর ভাবতে রাজি নন। কলকাতা থেকে আসা অনেকেই জানিয়েছেন, বিশ্বভারতী যে এখনও সাধারণের জন্য খোলেনি, তা তাঁরা জানতেনই না।
এ দিকে, করোনা পর্বের আগে পর্যন্ত রবীন্দ্রভবনের প্রবেশ মূল্য ছিল বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা, সাধারণ ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ৫০ টাকা, ছাত্রদের জন্য ১০ টাকা। দৈনন্দিন টিকিট বিক্রির হিসেব অনুযায়ী, সোম থেকে শুক্র পর্যটকদের প্রবেশ মূল্য বাবদ আয়ের অঙ্কটা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার এবং শনি ও রবিবার তা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। রবীন্দ্র ভবনের মিউজিয়ামের ভিতরে পুস্তক বিপণি রয়েছে। সেখানেও
করোনা-পূর্ব কালে বই বিক্রি বাবদ দৈনিক আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১০ হাজার টাকা। ফলে এত দিনে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা।
বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক অবশ্য বলছেন, “বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র খোলা হলেও সংগ্রহশালা খোলার বিষয়ে কেন্দ্রের কোনও
নির্দেশ এখনও আসেনি। তাই, তার আগে পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement