ভোটে বাধার নালিশ ঘিরে অশান্তি

দখলবাটির মালপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সোমবার সকালে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের ৮২ নম্বর বুথে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মাঝপথে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় ও শুভদীপ পাল

রামপুরহাট, সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২০
Share:

রামপুরহাটের দখলবাটিতে উত্তেজনা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বুথের পথে বাধার অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল রামপুরহাটের দখলবাটি গ্রামে। মুরারইয়ের হাবিশপুরে ভোটকেন্দ্রের ভিতরে দলীয় এজেন্টকে মারধরের নালিশ তুলল বিজেপি। ওই দলের অভিযোগ, পুলিশ তো বটেই, সব কিছু চোখের সামনে দেখেও এগিয়ে আসেনি কেন্দ্রীয় বাহিনী। উল্টে অশান্তি ঠেকাতে ভোটকেন্দ্রের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন কর্তব্যরত জওয়ানেরা। দু’টি ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের তরফে অবশ্য তা উড়িয়ে দেওযা হয়েছে। একই ভাবে সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা গ্রাম পঞ্চায়েতের কোমা ও ল’পাড়ায় বিজেপি সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী সেখানে পৌঁছে ওই ভোটারদের বুথে পৌঁছে দেয়।

Advertisement

দখলবাটির মালপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সোমবার সকালে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের ৮২ নম্বর বুথে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মাঝপথে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা জানান, ভোট দেওয়ার জন্য সেই গ্রামের অনেকে বাড়ি থেকে বেরলেও কিছুটা গিয়েই বাধার মুখে পড়েন। সকলেই ফিরে আসছিলেন। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল তৃণমূলের শ’খানেক লোক। তাদের মারধরে তরুণ মাল নামে এক বিজেপি সমর্থক আহত হন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, দখলবাটি গ্রামের শিবতলাপাড়ার শ’দুয়েক ভোটার ঘণ্টাদুয়েক ধরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যেতে পারছেন না খবর পেয়ে রামপুরহাট থানার আইসি আবু সেলিম বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে সওয়া ৮টা নাগাদ দখলবাটি গ্রামে পৌঁছন। আস্তানাপাড়ার রাস্তায় থাকা জমায়েত সরিয়ে ওই গ্রামের ভোটারদের বুথে নিয়ে যান।

দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের তরফে মামনি মাল অবশ্য ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি। পাল্টা বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘ওই দলের কর্মীরাই আমাদের সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছে।’’

Advertisement

মুরারই ২ ব্লকের রুদ্রনগর পঞ্চায়েতের হাবিশপুর গ্রামেও এ দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বুথের ভিতরে এক বিজেপি এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ তোলা হয়। বিজেপির অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি। পরিস্থিতি বুঝতে হাবিশপুরে যান বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল। সেই গ্রামে যান রামপুরহাটের মহকুমাপুলিশ আধিকারিক সৌম্যজিৎ বরুয়াও। বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরা বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছে। চার জন বিজেপি কর্মী জখম হন।

অন্য দিকে সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা গ্রাম পঞ্চায়েতের কোমা ও ল’পাড়া এলাকায় তাদের দলের সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয় বলে বিজেপির অভিযোগ। দলের নেতাদের নালিশ, মাঝরাস্তায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই ভোটারদের পথ আটকায়। কয়েক জনকে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, সকাল ১০টা নাগাদ কমিশনের আধিকারিক সহ রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় পৌছয়। জওয়ানদের দেখে দুষ্কৃতীরা পালায়।

বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘শুধু কোমা নয়, সব জায়গাতেই তৃণমূল গণ্ডগোল ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। কোথাও ভোট দিতে বাধা দিয়ে, কোথাও ভোটারদের প্রভাবিত করে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে সিউড়ি ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। তাই মিথ্যা অভিযোগ করে প্রচারের আলোয় আনতে চাইছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement