Howrah Municipali Corporation

পাঁচ বছর নিখরচায় রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের পথে হাওড়ার ঠিকাদারেরা

Advertisement

দেবাশিস দাশ

হাওড়া শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫২
Share:

খানাখন্দে ভরা ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে জমেছে জল। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বছরখানেক আগে যে রাস্তা কোটি টাকা খরচ করে সারানো হয়েছে, বছর ঘুরতে না ঘুরতে সেই রাস্তা থেকে পিচের আস্তরণ উঠে যাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছোট-বড় গর্ত তৈরি হচ্ছে। কিছু দিন আগে সারানো ঝাঁ-চকচকে রাস্তার অবস্থাও এতটাই বেহাল যে, যানবাহন
চলাচল তো দূর, হাঁটাচলাই দায় হয়ে উঠেছে।

Advertisement

যেমনটা হয়েছে গত তিন মাসের বর্ষায়। জমা জল নামতেই বেরিয়ে পড়েছে হাওড়ার
অধিকাংশ রাস্তার কঙ্কালসার ছবি। শহরের ড্রেনেজ ক্যানাল রোড, ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাস, বেনারস রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তায় তৈরি হয়েছে এক ফুট গর্ত। কোথাও আবার রাস্তার পিচ উঠে তৈরি হয়ে গিয়েছে ৮-১০ ফুট ব্যাসের গর্ত। বৃষ্টি হলেই সে সবে জল জমে বিপজ্জনক হয়ে যায় পথ। সমস্যা বাড়ে যানবাহন ও পথচলতি মানুষের।

এই ছবি বদলাতে বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুরসভা। রাস্তা তৈরির বরাত পেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো পাঁচ বছর নিখরচায় সেই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের অঙ্গীকার করতে হবে ঠিকাদারদের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন দরপত্র থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। পুরসভার প্রশ্ন, যে সব রাস্তা তৈরি করতে পুরসভার কয়েক কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, তা প্রতি বর্ষায় ভেঙে যাচ্ছে কী ভাবে? এর দায় তো ঠিকাদারদের নিতেই হবে।

Advertisement

সূত্রের খবর, শীঘ্রই হাওড়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামত করার জন্য দরপত্র-প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। যেখানে পাঁচ বছর নিখরচায় রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে চুক্তি করা থাকবে।

পুরসভার ঠিকাদারেরা অবশ্য এই সিদ্ধান্তে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, যে রাস্তার দরপত্র ডাকার পরেই স্থানীয় নেতা, প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধিদের শতাংশের হারে টাকা দিতে হয়, সেখানে ভাল গুণমানের রাস্তা হবে কী ভাবে? মাটির নীচ দিয়ে যাওয়া

পদ্মপুকুর প্রকল্পের জলের লাইন, টেলিফোনের লাইন, নিকাশির লাইন, সিইএসসির বিদ্যুতের লাইনের জন্য বার বার একটি রাস্তা কাটার পরে ঠিকাদারেরা পাঁচ বছর ধরে কী ভাবে সেই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করবেন?

হাওড়া পুরসভার ‘এইচএমসি কন্ট্র্যাক্টর্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি কাশীনাথ আদক বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত বাস্তবোচিত নয়, অযৌক্তিক। যে রাস্তায় এত জল জমে, সেখানে ভারী যানবাহন চলাচল কোনও ভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। সেখানে রাস্তা ভাল থাকার অঙ্গীকার করা অসম্ভব। এর সঙ্গে আছে বিভিন্ন দফতরের রাস্তা খোঁড়ার হিড়িক। আর আছে কাজপিছু নেতাদের প্রতি শতাংশের চাহিদা।’’

এই প্রসঙ্গে হাওড়ার পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর দাবি, রাস্তা তৈরির বরাত
পেলে কোন ঠিকাদার কাকে টাকা দেবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার। এর সঙ্গে প্রশাসনের যোগ নেই। তিনি বলেন, ‘‘নবান্ন সভাঘরের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যেটা নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেটাই মেনে চলা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement