বিক্ষোভ: তিলপাড়ায় পঞ্চায়েত দফতরের সামনে গ্রামের বাসিন্দাদের জমায়েত। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
ত্রাণশিবিরে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকেরা বারবার বেরিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ তুলে সিউড়ির তিলপাড়ায় পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। তাঁদের দাবি, ওই শ্রমিকেরা ইচ্ছেমতো বাইরে ঘুরছেন, এমনকি খাওয়ার পরে এঁটো পাতা যেখানে সেখানে ফেলছেন। ওই শ্রমিকদের মধ্যে কেউ করোনা-আক্রান্ত থাকলে এর জেরে তা গ্রামে ছড়াবে বলে বাসিন্দারা দাবি করেন। সোমবার বিকেলে বিক্ষোভের পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং পুরো এলাকা দমকল বাহিনীকে দিয়ে স্যানিটাইজ় করার আশ্বাস দেওয়া হয়
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিন্ জেলা বা ভিন্ রাজ্যের অনেক পরিযায়ী শ্রমিকই এই জেলাকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরচ্ছেন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সেখানে থেকে তাঁদের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, যাঁরা হেঁটে বাড়ি ফিরছেন তাঁদের সাময়িকভাবে রাখার জন্য ওই শিবির করা হয়েছে। ওটি কোনও নিভৃতবাস কেন্দ্রে নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা না হচ্ছে ততক্ষণ তাঁদের ওই শিবিরে রাখা হচ্ছে। তিলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন এলসি কলেজে সেরকমই একটি শিবির করা হয়েছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ওই শিবিরে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। তাই আবাসিকরা যখন তখন শিবিরের বাইরে চলে আসছেন। তাছাড়া খাবার পরে এঁটো পাতা কলেজের জানলা দিয়ে আবাসিকরা বাইরে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দাদের। এ সবের জেরেই আতঙ্ক ছড়ায়। গ্রামবাসীদের কথায়, ‘‘যাঁরা ওখানে রয়েছেন তাঁদের কে আক্রান্ত কে আক্রান্ত নয় সেটা তো আমরা বুঝতে পারছি না। কিন্তু ওঁরা শিবিরের বাইরে চলে আসছেন। তাছাড়া শিবিরটি গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত। তাই আমাদের মধ্যেও সংক্রমিত হওয়ার ভয় রয়েছে।’’ ওই শিবির তুলে নিয়ে অন্য কোনও ফাঁকা জায়গায় করার দাবি নিয়ে এ দিন দুপুরে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। প্রায় আধঘণ্টা বিক্ষোভ চলে।
যদিও ত্রাণ শিবিরে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী নেই বলে মানতে নারাজ জেলা পুলিশের কর্তারা। সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ প্রশাসনের নজরদারি আছে বলে জানান জেলা পুলিশের এক কর্তা। সিউড়ি সদরের মহকুমাশাসক রাজীব মণ্ডল বলেন, ‘‘ওখানে একটা সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। আমি বিডিওকে বলেছি বিষয়টি দেখতে এবং যাতে ত্রাণশিবিরে থাকা আবাসিকদের জন্য স্থানীয়দের কোনও সমস্যা না হয় তা দেখতে বলা হয়েছে।’’