পুরভবনে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পুরসভার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন শাসক দলেরই কাউন্সিলর এবং তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ। ওই কাউন্সিলরের অভিযোগ, তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের বকেয়া কিস্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে না। বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার পুরসভার কাজকর্ম কার্যত লাটে উঠেছিল। বিভিন্ন প্রয়োজনে পুরসভায় আসা মানুষকে ফিরে যেতে হয়।
পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা ঝালদার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের অভিযোগ, তাঁর ওয়ার্ডের অনেক বাসিন্দা আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণের টাকা পাচ্ছেন না। এ দিন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের অনেকেই পুরসভার বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ তুলে পুরসভা কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান। সঙ্গে ছিলেন সুরেশবাবুও।
সুরেশবাবুর সঙ্গে ঝালদার বর্তমান পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের ‘বিরোধ’ নতুন কিছু নয়। সোমবার প্রদীপবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা পুরসভা চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, সুরেশবাবু পুরপ্রধান থাকাকালীন একাধিক দুর্নীতি হয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুরেশবাবু এ দিন ময়দানে নামায় সেই বিরোধ ফের প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। বেলা ১১টা থেকেই এ দিন ঝালদা শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে পুরসভা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন আবাস যোজনার উপভোক্তারা। বেলা ১২টা নাগাদ সুরেশবাবুর নেতৃত্বে একটি মিছিল পুরসভা চত্বরে ঢোকার পরে পরিস্থিতি তেতে ওঠে। ঝালদা থানা থেকে আসে পুলিশ বাহিনী।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের কিস্তির টাকা না মেলায় তাঁরা ঘর তৈরির কাজ শেষ করতে পারছেন না। পুরসভাকে জানিয়েও কিস্তির টাকা মিলছে না বলে অভিযোগ।
পরে পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বিক্ষোভকারীদের বলেন, ‘‘আপনারা কারও কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। প্রকল্প খাতে যতটুকু টাকা রয়েছে, তা থেকেই আমরা পুজোর পরে সমস্ত ওয়ার্ডের উপভোক্তাদের কিছু কিছু টাকা দেব।’’
পুরপ্রধানের এই ঘোষণার পরেও বিক্ষোভ তুলতে চাননি সুরেশবাবুরা। পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। সুরেশবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে আমার ওয়ার্ডের ঘর প্রাপকদের কিস্তির টাকা আটকে রাখা হয়েছে। তাঁরা প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন। কাউন্সিলর হিসেবে আমাকেও তাঁদের সঙ্গে থাকতে হয়েছে।’’ বিকেলে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘মহকুমাশাসককে বিষয়টা তদন্ত করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’