জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার শেষে সিউড়ির একটি স্কুল থেকে বেরোচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। শনিবার। ছবি: শুভদীপ পাল
করোনা আবহে শনিবার ছিল রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হল সেটা। কোভিড বিধি তো মানা হয়েই ছে, প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নজর দেওয়া হয়েছিল বলে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে কোনও পরীক্ষার্থীকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে খবর মেলেনি।
কোভিড আবহে সমস্যা এড়াতে পরীক্ষার্থীদের বাড়ির কাছাকাছি কেন্দ্রেই পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে আগেই জানানো হয়েছিল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে ২৭৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি কেন্দ্র ছিল বীরভূমে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য বোলপুর কলেজ, ইলামবাজার ও পাড়ুই— দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সিউড়ির একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বিআইইটি) ও বেণীমাধব ইন্সটিটিউশন স্কুলকে বাছা হয়েছিল। সিউড়ি দু’টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন ৬৮২জন।
অনেক অভিভাবকেরা মিলিত ভাবে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করেছিলেন। তবে পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে সে জন্য প্রতিটি বাসমালিক সংগঠনকে প্রতিটি রুটে বাস চালানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন জেলা পরিবহণ অধিকারিক মৃন্ময় মজুমদার। অন্যদিকে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। যাতে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে জয়েন্টের পরীক্ষার্থীদের উঠতে দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে বলে মানছেন পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা।
রামপুরহাট থেকে জয়েন্ট পরীক্ষার্থী ছেলে নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে সিউড়ি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছিলেন মা পিয়ালী চট্টোপাধ্যায়। একই ভাবে জয়েন্ট পরীক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে মল্লারপুর স্টেশনপাড়া থেকে অসিতবরণ মণ্ডল এসেছিলেন ওই কেন্দ্রেই। তাঁরা বললেন, ‘‘আমরা বাসেই এসেছি। কোনও সমস্যা হয়নি। পর্যাপ্ত বাস ছিল।’’ তবে বাসের ঝুঁকি নেননি খয়রাশোলের ভীমগড়ের বাসিন্দা সুনীল ঘোষ। তিনি বললেন, ‘‘স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে সকালে ভীমগড় থেকে সিউড়ি এসেছি। ট্রেনে উঠতে কেউ বাধা দেননি।’’ যাতায়াত নিয়ে একই অভিজ্ঞতা সিউড়ি বেণীমাধব ইন্সটিটিউশনে পরীক্ষার্থী শুভদীপ সাহার।
একটি পিক-আপ ভ্যান ভাড়া করে সিউড়ি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেছিলেন দুবরাজপুর শ্রী শ্রী সারদা বিদ্যাপীঠের ছাত্র সপ্তর্ষি মণ্ডল, কবিরুল ইসলাম, সৌম্যব্রত রুজরা। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের বাবা হরিনারায়ণ মণ্ডল, শেখ সালামত নিখিল রুজ। জানালেন, ‘‘গাড়ি ভাড়া করে এসেছি। তবে ১১টায় পরীক্ষা দিতে স্বচ্ছন্দে বাসে আসা যেত।’’
শুধু যাতায়াত নয়, পরীক্ষা কেন্দ্রে কোভিড বিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাও খুশি করেছে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের। এর পাশাপাশি কোথাও একটা আক্ষেপ কাজ করতে শুরু করেছে এ দিনের পর। কারণ মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পুরোপুরি বাতিল হওয়ার পর এই প্রথম পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেলেন জয়েন্ট পরীক্ষার্থীরা। যাঁদের অধিকাংশই এ বার উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ছিলেন। সন্তানরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে জয়েন্ট এন্ট্রান্স দেওয়ার দেওয়ার পর অভিভাবকদের অনেকেই মনে করছেন মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক বাতিল না করে সংক্রমণ কমার অপেক্ষা করে এ ভাবেও পরীক্ষা নেওয়া যেত। পরীক্ষার্থীদের একাংশও সহমত তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গে।