ব্লক অফিসে অভিযোগকারী পঞ্চায়েত সদস্যেরা। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ব্লক অফিসে অভিযোগ জানালেন দলেরই কয়েকজন সদস্য। বুধবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের বেলশুলিয়ার ঘটনা। অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া, কাজে সংশ্লিষ্ট সংসদের সদস্যকে গুরুত্ব না দেওয়া প্রভৃতি। অভিযোগগুলি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত। অভিযোগ অস্বীকার করে বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা সর্দারের বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী থাকার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই অসুবিধে হচ্ছে। যে কোনও কাজ এলেই আগাম টাকা চান সদস্যদের একাংশ। আমি প্রতিবাদ করে অপ্রিয় হয়েছি।’’
ঘটনা জেনে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহারের টিপ্পনী, “তৃণমূলের ভাঙন অনেক আগেই শুরু হয়েছে। বেলশুলিয়ায় হয় নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সমস্যা হয়েছে, নয়তো তৃণমূলের কাজে দলের লোকজন সত্যিই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।’’ তবে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতে কী হয়েছে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
গত পঞ্চায়েত ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের সব ক’টিতে নির্বাচিত হন তৃণমূলের প্রার্থীরা। তাঁদের মধ্যে সাত জন এ দিন প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের মধ্যে আবু তাহের মণ্ডল, বকুল সর্দার এবং মিঠু পৌলি বলেন, ‘‘দলের অঞ্চল সভাপতি আর ঠিকাদারদের নিয়েই পঞ্চায়েতের যাবতীয় কাজ করেন প্রধান। অভিযোগে ফল না হলে, জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে অনাস্থা আনার কথা ভাবব।’’
অভিযোগ উড়িয়ে বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা সর্দার বলেন, ‘‘বোর্ড মিটিং হলেই সবাইকে ফোনে ডাকা হয়। দু’-তিন জন বেশির ভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন।’’ অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন কৃষ্ণাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের ব্যাপারে সুপারভাইজ়ার সদস্যদের সই করাতে গেলেও টাকা চাওয়া হয়। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ ত্রিপল নিজেরা নিয়ে ব্যবহার করতে চান তাঁরা। আমি নিষেধ করেছি বলেই রাগ। সরকারি টাকা নয়ছয় করা যাবে না। আমার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে বলতেই পারেন।”
তৃণমূলের বেলশুলিয়া অঞ্চল সভাপতি মান্নান কোটালও বলেন, “যে সদস্যেরা অভিযোগ করছেন, তাঁদেরই কেউ-কেউ একশো দিনের কাজে সুপারভাইজ়ারদের থেকে টাকা চেয়েছেন বলে আমার কাছে অভিযোগ আছে। সময়মতো সব প্রকাশ পাবে।” তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই সাত পঞ্চায়েত সদস্য।