—ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আমলে ফের বেআইনি কাজের অভিযোগ। পরিকল্পনা বহির্ভূত ভাবে নির্মাণকাজের জন্য দু’টি বহুতলের বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল বিষ্ণুপুর পুরসভা। অভিযোগ, বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান থাকাকালীন শ্যামাপ্রসাদের আমলে অনুমোদিত ওই বহুতলে বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের শালবাগান এলাকায় বছর দুই আগে একই দাগ নম্বরে পাশাপাশি দু’টি বহুতল তৈরির কাজ শুরু করে একটি প্রোমোটার সংস্থা। নির্মাণকাজ শুরুর আগে ২০১৯ সালে নিয়ম মোতাবেক পুরসভার কাছে বহুতলগুলির পরিকল্পনার অনুমোদনও করানো হয়। দু’টি বহুতলের মধ্যে একটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। অন্যটির নির্মাণকাজ চলছে। ওই বহুতলগুলিতে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বলে সম্প্রতি পুরসভায় অভিযোগ জমা পড়ে।
সোমবার বিষ্ণুপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন অর্চিতা বিদের নেতৃত্বে পুর আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা নির্মাণস্থলে হানা দেন। অনুমোদিত পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবের নির্মাণ মেলাতে গিয়ে দেখা যায়, অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। এর পরই বহুতলগুলির পরিকল্পনা বহির্ভূত অংশ দ্রুত ভেঙে ফেলার জন্য নির্মাণকারী সংস্থাকে নোটিস পাঠায় পুরসভা। এক মাসের মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর না হলে তা ভেঙে ফেলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
বিষ্ণুপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন অর্চিতা বিদের নেতৃত্বে পুর আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা নির্মাণস্থলে হানা দেন। —নিজস্ব চিত্র।
অর্চিতা বলেন, ‘‘এক মাস আগে এই বহুতলগুলি নিয়ে অভিযোগ আসে। প্রোমোটার সংস্থাকে নোটিস দেওয়ার পরেও কর্ণপাত করেনি তারা। আজ (সোমবার) নির্মাণস্থলে এসে পরিকল্পনা বহির্ভূত অংশ ওই সংস্থাকে দেখিয়ে অবিলম্বে তা ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হল। এ ধরনের আরও অভিযোগ জমা প়ড়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ নির্মাণকারী সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার অরিজিৎ নন্দীর দাবি, ‘‘পুরসভার অনুমোদিত পরিকল্পনা কোনও দিন দেখিনি। পুর আধিকারিকেরা দেখানোর পর বুঝলাম, অনুমোদন অনুসারে নির্মাণ হয়নি।’’
বিষ্ণুপুর পুরসভার নজরদারি এড়িয়ে ওই দুই বহুতলে বেআইনি অংশ কী ভাবে গড়ে উঠল? এ ক্ষেত্রেও কি পুরসভার তৎকালীন প্রধান শ্যামাপ্রসাদ বা অন্য কোনও চক্র জড়িত? প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসীরা। শালবাগান এলাকার বাসিন্দা পার্থ উপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘পুরসভার তোয়াক্কা না করে প্রোমোটার সংস্থা কাজ চালাচ্ছিল। প্রথম থেকেই এলাকাবাসীর সন্দেহ ছিল। প্রতিবাদ করার চেষ্টাও করেছি। কিন্তু এত দিন ওই সংস্থা আমল দেয়নি। অজানা কারণে বিষয়টিতে সে ভাবে নজর দেয়নি পুরসভাও।’’